বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়া ও রাষ্ট্র মেরামতে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে নতুন নাগরিক সংগঠন ‘পরিবর্তনের লক্ষে জনসমাজ’। এর মধ্যে সংবিধানের ব্যাপক ও মৌলিক পরিবর্তন বা পুনর্লিখনের জন্য গণপরিষদ গঠন করতে হবে। এছাড়া কোন ব্যক্তি একাধারে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা, দলীয় প্রধান হতে পারবে না। কোন ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পদক সম্পাদক থাকতে পারবে না। এছাড়া কোন ব্যক্তি দুই মেয়াদ বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। পাশাপাশি দুর্নীতিবাজ, টাকাপাচারকারী ও ব্যাংকের টাকা-রাষ্টীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ বন্ধ করতে হবে।
আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত নংগঠনটির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ‘পরিবর্তনের লক্ষে জনসমাজ’ শীর্ষক এই নাগরিক সংগঠনটি স্বল্প মেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন সংগঠনের সমন্বয়ক আবুল হাসিব খান। এছাড়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. আরিফুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ডা. সামনুন এফ তাহা।
রাষ্ট্র মেরামত ও সংস্কারের বেশ কিছু পদক্ষেপ তুলে ধরে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশকে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, শোষণহীন, প্রগতিশীল, কল্যাণময় রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। স্বপ্নপূরনে বাংলাদেশ হতে হবে কল্যাণময় রাষ্ট্র। ইহাকে সোস্যাল ডেমোক্রেটিক রাষ্ট্র বলা যেতে পারে।
তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার উন্নতির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পুলিশ বাহিনীর যে সমস্ত সদস্য এখনো কাজে যোগদান করেননি অথবা যারা ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসেবে পরিচিত তাদের পদে বিশেষ করে সিপাহী পদে দ্রুত নিয়োগ প্রদান করতে হবে। সৎ ও দক্ষ বিচারক নিয়োগ ও পদায়ন করে বিচার ব্যবস্থাকে গতিশীল করা। এছাড়া উচ্চ দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতির জন্য সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায় এনে মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে। অর্থপাচার ও ব্যাংকের অর্থআত্মসাৎ এর টাকা দ্রুত ফেরত আনার পদক্ষেপ নেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এছাড়া দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন করা। জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি অঞ্চল, জেলা, নগর এবং শ্রেণি, পেশা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্টীর প্রতিনিধির সমন্বয়ে উচ্চকক্ষ গঠন করা। অর্থআত্মসাৎ ও পাচারকারীদের সম্পদ অধিগ্রহণ করা। সব সরকারী কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী জমা দেয়া। বাংলাদেশ ব্যাংককে আরো গতিশীল করা। ব্যাংকিং, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরে আনা। সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও শিল্প কারখানায় সৎ ও দক্ষ ব্যবস্থাপক নিয়োগ করা। বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করা হয়। এছাড়া সমতা ও ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক নদীসমূহের পানি বন্টন সম্পাদন করা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন