চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মশা নিয়ে গবেষণার জন্য একটি মশা গবেষণাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল। গত এপ্রিলে এটি চালুর কথা ছিল। কিন্তু সাড়ে ছয় মাস পার হলেও চালু করা হয়নি। ফলে, চসিকের মশা নিয়ে গবেষণাগার তৈরির উদ্যোগটি অন্ধকারে পড়ে আছে। চসিকের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ৩০ মার্চ নগরের হালিশহর ফইল্যাতলী বাজারসংলগ্ন মহেশখালে মশক নিয়ন্ত্রণে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধনকালে গবেষণাগারটি চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন।
বর্ষার পরও এডিশ মশার আক্রমণের শিকার হয়ে প্রতিনিয়তই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ফলে, মশা নিয়ে গবেষণাগারের বিষয়টিও সামনে আসে। সময়ের বাস্তবতায় এটি এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন নগরবাসী।
চসিক সূত্রে জানা যায়, নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে গবেষণাগারটি গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মশাতে রূপান্তরের জন্য স্পেশাল নেট, লার্ভা টেস্টের জন্য বক্স স্থাপনসহ বেশ কিছু অবকাঠামোগত অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু ল্যাব পরিচালনায় বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চসিকে টেকনিক্যাল পারসন না থাকায় ল্যাবের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। তবে গবেষণাগার চালু না হলেও মশক নিধন কার্যক্রম চলমান আছে। চলতি ডেঙ্গু মৌসুম কেন্দ্র করে অক্টোবরজুড়ে চলবে মশক নিধন কার্যক্রম।
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী বলেন, গবেষণাগারের অবকাঠামোগত কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু পরিচালনার মতো কারিগরি জনবল নেই। এটি নতুন চালু করা হবে, তাই আগে জনবলের পদ সৃষ্টি করতে হবে। তাছাড়া, অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও তা হচ্ছে না। কারণ, গ্র্যাজুয়েশন করা শিক্ষিত কেউ অস্থায়ী চাকরিতে প্রবেশ করতে চান না। তবুও চেষ্টা চলছে গবেষণা ল্যাবটি চালু করার। তিনি বলেন, গবেষণাগারটি চালু হলে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে এখানে পরীক্ষা করে দেখা যাবে কোন ধরনের ওষুধ কোন মশায় কার্যকর। এরপর গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক ওষুধ ছিটানো এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৬৮৯ জন এবং মারা যায় দুজন। চলতি বছরে মোট আক্রান্ত হয় ২ হাজার ১৯৪ জন এবং মারা যায় ১৮ জন। ফলে প্রতিনিয়তই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, নগরের ৪১টি ওয়ার্ড থেকে ২৩টি এলাকাকে লাল, হলুদ, নীল ও সবুজ রঙে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে কোতোয়ালি, বাকলিয়া, বায়েজিদ, বন্দর, পাহাড়তলী, খুলশী ও চকবাজার এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।