শিরোনাম
১৬ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:১৬

কুষ্টিয়ায় রোপা আমন ধানে পোকার আক্রমণ, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ায় রোপা আমন ধানে পোকার আক্রমণ, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কুষ্টিয়ায় রোপা আমন ধানে মাজরা পোকার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। ধানের গোছায় পোকার আক্রমণের কারণে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। কোন ভাবেই পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় কুষ্টিয়া অঞ্চলের প্রায় কয়েক হাজার কৃষক ফসলের কাঙ্খিত ফলন নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় ৮৮ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ হাজার ৩৮৮ হেক্টর জমিতে উফশী, ১০ হাজার ৪৭৪ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ১ হাজার ৩৩ হেক্টর জমিতে স্থানীয় রোপা আমন ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে।

জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উফশী ধানের চাষ কম হলেও অন্য জাতের ধানের আবাদ বেড়েছে। ধান গবেষণা উদ্ভাবিত ও বিনা উদ্ভাবিত ৩৪ জাতের উফশী, ১২ জাতের হাইব্রিড ও ২টি স্থানীয় জাতের ধান চাষ করেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলায এবার উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে স্বর্ণা (১১ হাজার ৯৪৭ হেক্টর), ব্রিধান-৪৯ (১০ হাজার ৪১৬ হেক্টর) ও ব্রিধান-৩৯ (১০ হাজার ১৫৩ হেক্টর) চাষবাদ করা হয়েছে। হাইব্রিড ধানের মধ্যে রয়েছে ধানীগোল্ড (পাঁচ হাজার ৮২১ হেক্টর), এটুজেড-৭০০৬ (দুই হাজার ৫৫৪ হেক্টর) ও মাহিকো-১ (৫২০ হেক্টর)। এছাড়াও কুষ্টিয়ার দুটি স্থানীয় জাত কালোজিরা ও বাদশা ভোগের চাষ হয়েছে এক হাজার ৩৩ হেক্টর জমিতে। মিরপুর উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে এবং খাটোবাবু ও ভেড়ামারায় ৫০০ হেক্টর জমিতে শুরু হয়েছে
রূপসা জাতের ধানের চাষ।

জেলা কৃষি বিভাগ বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় চার লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন রোপা আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে পাওয়া যাবে প্রায় দুই লাখ ৯৬ হাজার ৩১৬ মেট্রিক টন চাল। তবে জেলা জুড়ে ধান ক্ষেতে মাজরা বা কারেন্ট পোকার উপদ্রব দেখা দেয়ায় কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে।  

জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, এবার জেলায় রোপা আমন ধানের বেশ ভালো আবাদ হয়েছে। তবে মাজরা পোকা আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। 

কুষ্টিয়ার উজান গ্রাম এলাকার কৃষক সোহরাব হোসেন জানান, ধানে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না। আর পোকা দমন করা না গেলে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, এ বছর জলবায়ুর কারণে পোকার আক্রমণ একটু বেশি দেখা দিয়েছে। তবে আমরা কৃষককে সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, বর্তমানে পোকার আক্রমণ কিছুটা কমে গেছে। পোকার আক্রমণ থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যায় এ ব্যাপারে কৃষি অফিসারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর