বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক প্রাণবন্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এবিজি টাওয়ারের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন এবং বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা (ট্রেজারার) ময়নাল হোসেন চৌধুরী।
সভায় উপদেষ্টারা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, জীবনধারা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আন্তরিকভাবে আলোচনা করেন। তারা শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চান এবং একে একে পরামর্শ দেন কীভাবে তারা নিজেদের জ্ঞান, নৈতিকতা ও দেশপ্রেম দিয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরাও নিজেদের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, বসুন্ধরা শুভসংঘের এই বৃত্তি তাদের শিক্ষাজীবনে যেমন অর্থনৈতিক স্বস্তি দিয়েছে, তেমনি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে সমাজের জন্য কিছু করার।
তারা আরও বলেন, শুভসংঘ শুধু বৃত্তি দেয় না, আমাদের স্বপ্ন দেখতে শেখায়। আমাদের ওপর তাদের এই আস্থা আমাদের আরও দায়িত্বশীল করে তোলে।
সমাজকল্যাণ ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী খাদিজা বলেন, আমি জন্মগতভাবে একচোখে দেখতে পাই না। এর ফলে আমার চিকিৎসার জন্য অনেক খরচ হয়। এজন্য আমার পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করা পরিবারের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছিল। অন্যদিকে আমার জন্মগত চোখের অসুস্থতার কারণে টিউশন করতেও পারি নাই।
এমতাবস্থায় বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করায় আমি এখন ঢাকায় পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যেতে পারছি। আমি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।
ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানা বৃষ্টি বলেন, আমি দ্বিতীয় শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় আমার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর কৃষক মামা কষ্টে আমার পরিবারের ভরণপোষণ করে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে আমার পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। এখন বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে আমি আমার পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাচ্ছি।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা আমাদের ভবিষ্যতের আলোকিত প্রজন্ম। যত কষ্টই আসুক, জ্ঞানার্জনের পথ থেকে সরে যেও না। মানুষ হিসেবে সততা, মমতা ও দায়িত্ববোধের চর্চা করো—এগুলোই তোমাদের বড় সম্পদ। অস্বচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ রয়েছে, তোমরা কোনো প্রকার চিন্তা না করে পড়াশোনা চালিয়ে যাও।
ময়নাল হোসেন চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষা জীবনে পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের কোনো বিকল্প নেই। তোমরা যারা এই শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছো, তারা প্রমাণ করেছো যে চেষ্টা করলে কিছুই অসম্ভব নয়। বসুন্ধরা গ্রুপ এবং শুভসংঘ মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ শুধুমাত্র একটি সংগঠন নয়, বরং এটি এক পরিবার—যেখানে ভালো মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের সকল শুভ কাজের সাথে যুক্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/কামাল