দশম জাতীয় সংসদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সরকারের স্থায়ী কমিটি পর পর তিনবার চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বাস্তবায়নের সুপারিশ এবং বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকারসহ চাকরিতে আবেদনের বয়স বৃদ্ধি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
শনিবার সকাল ১১ টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সমাবেশে সাধারণ ছাত্র পরিষদের মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, সংসদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি পরপর তিনবার সুপারিশের পরও কেন উপেক্ষা করেছেন? সরকার (বর্তমান) ৭০ বছরের প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের যারা সবসময় জনগণের পক্ষেই কাজ করেন তাহলে বর্তমানে এই ২৮ লাখ তরুণদের দাবি কেন অবহেলা করছেন? আমরা বলতে চাই দ্রুত সময়ে আমাদের এই ৭ বছর ধরে চলা দাবি মেনে নেন এবং ৩৫ বাস্তবায়ন করেন।'
বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র পরিষদের নেতা এম এ আলী বলেন, সরকারি চাকরিতে বয়সের সময়সীমা যতক্ষণ না পর্যন্ত ৩৫ বাস্তবায়ন হবে, আমাদের দাবি যতক্ষণ পর্যন্ত আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। আমরা রাজপথে দিন কাটাবো, রাত কাটাবো তবুও রাজপথ ছাড়বো না। দেখি সরকারের বোধোদয় হয় কিনা?'
বর্তমান সরকারকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, সরকার আমাদের সাথে চরম অন্যায় করছে। আমরা চাকরির বয়স ৩০ থেকে ৩৫ করার লক্ষ্যে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আজ অব্দি আন্দোলন করে আসছি। আজ যদি আমাদের জনসমর্থন না থাকতো তাহলে বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতে মানববন্ধন হতো না, সমাবেশ হতো না।
এসময় তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি আমাদের দাবিটি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে বাংলার ৬৪ জেলাতে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করব। যদি বাংলার ছাত্র সমাজ রাস্তায় নেমে যায়, পুরো দেশে যদি ধর্মঘট পালন হয় তাহলে এই রাষ্ট্রের অবস্থা, কি হতে পারে সেটা আপনারা দেখেছেন বারবার।
বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদের পক্ষে আলামিন রাজু বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ৩৩ পৃষ্ঠায় বয়স বৃদ্ধির ঘোষণা ছিল। কিন্তু জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেনের কথায় আমরা বেকার যুব ছাত্রসমাজ হতাশাগ্রস্ত।
দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই আন্দোলনে অংশ নেন।
সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি জেলা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা, চাকরি নয় সুযোগ চাই ৩৫ ছাড়া গতি নাই, ৩০ নিপাত যাক ৩৫ এর জয় হোক, রক্ত লাগলে রক্ত নাও ৩৫ এর মুক্তি দাও, হতাশা মুক্ত বাংলাদেশ গড় ৩৫ বাস্তবায়ন কর, বয়সের ফ্রেমে মেধাকে বন্দী করা চলবে না, প্রভৃতি স্লোগান যুক্ত প্ল্যাকার্ড হাতে উপস্থিত হন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি হারুন-অর-রশিদ, ইউসুফ জামিল, রফিকুল ইসলাম কিরন, মহাদেব সরকার, নাছির হোসেন, কামাল হোসেন, জসিম উদ্দিন, নাসরিন সুমি,অরুণিমা, নাহিদা আক্তার প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন