রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ (পিইএসসি) বিভাগ চালু হয়েছে ২০১৫ সালে। প্রতিষ্ঠার প্রায় চার বছরেও বিভাগে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তাই ধার করা শিক্ষক নিয়েই বছরের পর বছর চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। শিক্ষক ছাড়াও এখানে কোনো গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাব নেই। নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নিয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে খোলা হয় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামের দুইটি কক্ষ শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে যাত্রা শুরু করে বিভাগটি। বিভাগের চারটি ব্যাচের বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ১২০ জন।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রায়হানুল হক অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষক না থাকায় সঠিক নির্দেশনাও অনেক সময় পান না তারা। আবার স্থায়ীভাবে নিয়োগ না হওয়ায় খণ্ডকালীন শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নেন না। খেলার মাঠের পাশে শ্রেণিকক্ষের কারণে সবসময় একটি কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ থাকে। এতে করে আমাদের পড়ালেখায় মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। আমরা বেশি কিছু চাই না। আমাদের নিজস্ব ক্লাসরুম দিক প্রশাসন, এতবড় চারটে বিজ্ঞান ভবনে ছোট একটি বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
বিভাগের সভাপতি প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কমল কৃষ্ণ বিশ্বাস সার্বিক বিষয়ে বলেন, ‘শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় শুরুর দিকে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের। শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় কোর্স শেষ করতে শিক্ষকদেরও বেগ পেতে হয়েছে। আমি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে অনেকবার অবগত করেছি। আশা করছি এসব সংকট খুব শিগগিরি কেটে যাবে।
তবে শিক্ষক সঙ্কট ও অপ্রতুল শ্রেণিকক্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘বিভাগ সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণে এতদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটা আটকে আছে। এ কারণে অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়েই শ্রেণি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ খুব শীঘ্রই সম্ভাব্য শিক্ষকদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে।
শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ভবনের বর্ধিতকরণ এর কাজ চলছে। এগুলোর কাজ শেষ হলেই আশা করছি পিইএসসি বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট আর থাকবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিনেটের এক সদস্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, ‘ধার করা শিক্ষক নিয়ে বিভাগ চলতে পারে না। উদ্যোগ নিয়েও এখন পর্যন্ত শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া চার বছরের মাথায় শিক্ষার্থীদের অপ্রতুল শ্রেণিকক্ষ, খণ্ডকালীন শিক্ষক, একাডেমিক সরঞ্জামাদির সঙ্কটের মধ্যে বিভাগ চলতে থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন