ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে প্রশাসনিক জটিলতা ও সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক শিক্ষার্থীদের নানা রকম হয়রানি বন্ধের প্রতিবাদে আট দফা দাবিতে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী তার সঙ্গে যুক্ত হন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তিনি।
সমস্যা সমাধানে তার দাবিগুলো হলো, শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন করা; প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটালাইজড করা; নিরাপত্তা ও হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্র তদন্তের স্বার্থে অফিসসমূহের অভ্যন্তরে প্রতিটি রুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা; প্রশাসনিক ভবনে অফিসসমূহের প্রবেশদ্বারে কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় ও প্রয়োজনীয় তথ্য সংবলিত ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন; প্রশাসনিক ক্যান্টিনের উন্নয়নসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা; কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানুষিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতমূলক করা।
এছাড়াও অফিস সময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কাজেই লিপ্ত না হওয়া ও প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন অফিস বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ক্লাবসমূহে স্থানান্তর নিশ্চিত করা এবং তাদের নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিনষ্টকারী ব্যানার লিফলেট ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পরিবেশবান্ধব নির্বাচনী প্রচারণা নিশ্চিত করা প্রভৃতি।
বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসনাত। এসময় তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গত বছরই তার গৌরবময় শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ১০১তম বছরে এসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক জটিলতাজনিত হয়রানি কমেনি। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, হল অফিস ও বিভাগীয় অফিসের মধ্যে কাজের সমন্বয়হীনতার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সবক্ষেত্রে ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এখনো এনালগ পদ্ধতির ধুলো মলিন ফাইল-পত্রের ভারে ন্যুব্জ।’
হাসনাত বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে তাদের আচরণ মনিব-গোলাম পর্যায়ের। এমতাবস্থায় আমরা মনে করি যে ডিজিটাল বাংলাদেশের সারথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হতে উপরোল্লিখিত সমস্যাগুলো নিরসন হওয়া প্রয়োজন।’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা