পক্ষপাত ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ায় কুশপুত্তলিকা দাহ করে রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। পরে বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সাংদস বাদশার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে উস্কানিমূলক ও পক্ষপাতমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কেননা তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে এমন বক্তব্য দিতে পারেন না। এই বক্তব্যে তিনি একটি পক্ষকে উস্কানি দিচ্ছেন এবং অন্যপক্ষকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তাই এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাকে রাবিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।
তিনি আরো বলেন, রামেক কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের সাথে যেই বর্বরোচিত আচরণ ও ছুরি-কাচি দিয়ে আঘাত করেছে, আমরা যদি কিছু করতাম, তবে সেটা অন্যকিছুতে রূপ নিত। কিন্তু আমরা তা-না করে সুষ্ঠু সমাধান চেয়েছি। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা চাই দ্রুতই এই ঘটনার বিচার নিশ্চিত করা হোক এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। কেননা মেডিকেলে তাদের একক আধিপত্বের কারণে কোন সাংবাদিক পর্যন্ত ভিতরে ঢুকতে পারে না এবং তাদের অন্যায় ও নির্যাতনগুলো বাহিরে প্রকাশ করতে দেয় না। সকলে তাদের কাছে জিম্মি। তাই এসব বিষয় উদঘাটনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হোক। এই ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, যে ছুরি গুরুতর আহত ছাত্র শাহরিয়ারের চিকিৎসায় ব্যবহারের কথা ছিল, সেটা না করে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হত্যার উদ্দেশ্যে রোগীর সাথে থাকা সহপাঠীদের উপর চিকিৎসার ছুরি-কাচি দিয়ে হামলা করেছে মেডিকেলের বর্বর ইন্টার্ন, স্টাফ ও সংশ্লিষ্টরা। আহতরা আজ বিভিন্ন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। শুধুমাত্র চিকিৎসা অবহেলালার প্রতিবাদ করায় তাদের উপর এই হামলা করা হয়েছে। কিন্তু এঘটনায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষ উল্টো আমাদেরই তিনশো শিক্ষার্থী নামে মামলা করেছে। এটা নিঃসন্দেহে হঠকারিতা। তাই সেদিনের ঘটনায় মেডিকেল সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি অপসারণের জোর দাবি জানাই।
এরাআগে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজে আয়োজিত মানববন্ধন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও রামেক হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা রাবির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হাসপাতালে শাহরিয়ারকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছিল। তার পালস ছিল না। এটা প্রমাণিত। আর সেজন্য ডাক্তারদের আর নতুন কোন সার্টিফিকেট দরকার নেই। হত্যা করে আপনারা এনেছিলেন, আর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আপনারা পোস্টমর্টেম ছাড়াই ডেড বডি নিয়ে গেছেন। আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করেছি। আমরা চাই, কবর থেকে ডেড বডি তুলে পোস্টমর্টেম করা হোক।’ সাংসদের এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন