জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নির্মাণাধীন দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে অতি দ্রুত পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ ও সীমানা প্রাচীর ভাঙার অপরাধে নূর আলম ওরফে বাবুলসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনাসহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজে বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা অপ্রত্যাশিত। কেরাণীগঞ্জে নির্মাণাধীন ক্যাম্পাসের ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। যার জন্য বিভিন্ন ইস্যুতে স্থানীয় অনেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার সুযোগ পাচ্ছে বার বার। এতে মূলত আমাদের স্বপ্নের নতুন ক্যাম্পাস তৈরির কাজটি পিছিয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এর মধ্যে গত সোমবার কেরাণীগঞ্জের মুজাহিদনগর মাদ্রাসার পাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে স্থানীয় নূর আলম ওরফে বাবুলের নেতৃত্বে। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজে ভবিষ্যতে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে আমরা সবাই মিলে সেটি প্রতিহত করব।
এসময় শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, নতুন ক্যাম্পাসের নির্মাণাধীন সীমানা প্রাচীর ভাঙার অপরাধে বাবুলসহ তার বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে, ক্যাম্পাসের সমতল ভূমি থেকে যারা মাটি চুরি করে ১৫০টি কূপ করেছে তদন্তপূর্বক তাদের বিচার করতে হবে, নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব করার জন্য সচেষ্ট হতে হবে, নতুন ক্যাম্পাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষিত পুলিশ ফাঁড়ির দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে, নতুন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরীর ব্যবস্থা করতে হবে, চলমান সীমানা প্রাচীরের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, কোনো অদৃশ্য শক্তি যাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজের ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর প্রাঙ্গণে নূর আলম ওরফে বাবুলের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। পরে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুন কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নির্মাণাধীন নতুন ক্যাম্পাসের সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করে স্থানীয়রা। স্থানীয় নূর আলম ওরফে বাবুল, তার ম্যানেজার বিলাস ও চালক (ড্রাইভার) কামালসহ স্থানীয় ২০-২৫ জন লেবার এনে হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নতুন ক্যাম্পাসের নির্মাণাধীন প্রাচীরের পিলার ভাঙচুর করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডাও হয় তাদের।
পরে পুলিশ আসলে ভাঙচুর চালানো স্থানীয়রা সবাই পালিয়ে যান। এসময় তাদের ব্যবহৃত প্রাডো জিপ গাড়িটি রেখে চলে যায়। দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় গাড়িটি জব্দ করে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই