রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে সিট বরাদ্দের পদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ পদ্ধতি পরিবর্তন ও আবাসিক সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবিও জানান তারা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ দাবি জানানো হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ খান বলেন, সিট বরাদ্দ নিয়ে কিছু শিক্ষার্থীর অসন্তোষ প্রশাসনের চোখে পড়েছে। সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ দিলে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত সময়ে প্রশাসন জানিয়েছিল জ্যেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সিট দেয়া হবে। কিন্তু নুতন নীতিমালায় হলে চতুর্থ বর্ষে পড়েও একজন সিট পাচ্ছে না। অথচ দ্বিতীয় বর্ষের অনেকে সিট পাচ্ছে। যা হতাশাজনক। তাই এই নীতিমালা বাতিল করে নতুনভাবে আবাসিকতা প্রদান করতে হবে। এছাড়া নির্মাণাধীন হলের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদের জন্য গণরুমের ব্যবস্থা করতে হবে। আবাসিক সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। বাসগুলোর রুট দীর্ঘ করতে হবে।
এদিকে, হলে সিট না পেয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ জানিয়েছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিদা কনক। তিনি বলেন, হলে সিট বরাদ্দের নীতিমালা অনুসারে আমার সর্বমোট স্কোর হয় ৯২; প্রকাশিত ফলাফল বিবেচনা করলে যা সর্বোচ্চ স্কোর হবার কথা। কো-কারিকুলার সনদগুলো বিবেচনা করা না হলেও, শুধু জ্যেষ্ঠতা ও মেধার ভিত্তিতেই আমার সর্বমোট স্কোর হয় ৮৯; প্রকাশিত ফলাফল বিবেচনায় যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ফলাফলে সর্বনিম্ন ৮৪.৩৪ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দেয়া হলেও আমাকে দেয়া হয়নি। অথচ প্রণীত সিট বরাদ্দের নীতিমালা অনুসারে জ্যেষ্ঠতা ও একাডেমিক ফলাফলের দিক বিবেচনায় আমার সিট হওয়ার কথা।
এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, একই বিভাগের আবেদনকারীর সংখ্যা ৩ অথবা ৩-এর কম হলে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের/অনুষদের সংশ্লিষ্ট ব্যাচের বার্ষিক সর্বোচ্চ জিপিএ/সিজিপিএ ধরে হিসেব করা হয়েছে। তবে সংখ্যাটি ৩-এর বেশি হলে আবেদনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ বার্ষিক জিপিএ/সিজিপিএ ধরে স্কোর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শুরুর দিকে একটু সমস্যা থাকে। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি থেকেই এই সিট বরাদ্দের প্রক্রিয়াটি অটোমেশন পদ্ধতিতে হবে। আশা করি তখন তেমন কোনও সমস্যা থাকবে না।
অন্যদিকে, সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আইন অনুষদের সিলেবাস এবং পাঠ্য কার্যক্রম অন্যদের থেকে ভিন্ন। সেমিস্টার পদ্ধতিতে সেটা সম্পূর্ণ হয় না। ফলে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি বেশকিছু দিন থেকেই সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। আমরা দ্রুত এটার সমাধান চাই।
এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ খান বলেন, বিষয়টি একাডেমিক কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তীতে ফের আলোচনার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে আসার জন্য কাজ চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ