রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) নিয়োগ পাওয়া নতুন অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানের অপসারণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ সমাবেশ, ক্লাস বর্জন ও অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগানোর ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
অধ্যক্ষকে অপসারণ করা না হলে আগামী শনিবার থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের ফরেনসিক প্রতিবেদন পরিবর্তনের অপচেষ্টা ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগকে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে নিপীড়নবিরোধী চিকিৎসক ও ছাত্র সমাজের ব্যানারে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগে সকালে বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী ও ছাত্র-জনতার ব্যানারে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
কলেজের সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ শাহ মো. সরওয়ার জাহানকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে উপাধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানকে অধ্যক্ষ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যক্ষ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ মকবুল হোসেনের সই করা এক চিঠিতে রংপুর গত মঙ্গলবার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শাহ মো. সরওয়ার জাহানকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে একই কলেজের উপাধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে। অধ্যক্ষ নিয়োগের পর দিনই বুধবার তার পদত্যাগ দাবিতে প্রথম বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে নিপীড়নবিরোধী চিকিৎসক ও ছাত্র সমাজের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে সমাবেশে জড়ো হয়। এসময় বক্তব্য দেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী নিয়াজ শরীফ, নাজমুল সাদাকত তানজিল, ফাতেমা আজাদ প্রমুখ।
অভিযোগের বিষয়ে নতুন অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমান দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে আমি উপাধ্যক্ষ ছিলাম এবং আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এখন আমাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার পর একটি চক্র নিজেদের ফায়দা হাসিলের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
তিনি জানান, শহীদ আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বিকৃতির অপচেষ্টার বিষয়টি ঠিক নয়। তিনি বণে একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ক্যাম্পাসেরএই অবস্থা সৃষ্টি করছেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক