সম্পূরক বৃত্তি, জকসু নীতিমালা ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা। একই সাথে দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত ঘেরা না ফেরার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত ছাত্রনেতারা।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা ধরে দুই দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা 'আটটা টু আটটা, বাজায় কার ঘণ্টা',' ভিসি স্যার জানেন না নাকি, আমরা এখানে বসে গেছি' ভিসি স্যার শুনছেন নাকি, আমরা এখানে বইসা গেছি',' হচ্ছে হবে বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও',' করছি করছি বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও',' জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো','সিন্ডিকেটের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে',' জকসু আমার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার',' বৃত্তি আমার অধিকার মুখে দেওয়ার সাধ্য কার',' বিপ্লবে বলিয়ান, নির্ভীক জবিয়ান',' সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেয়
অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জবি শাখার মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে জবিয়ানদের প্রাণের দাবি ছিল আবাসন বৃত্তি ও জকসু নির্বাচন কিন্তু দীর্ঘ এক বছরের ও আমরা তার বাস্তবায়নের নূন্যতম কিছু দেখতে পারছি না। তাই আমাদের দাবি দুইটি না মানা পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যােো।
ইসলামি ছাত্রশিবিরের জবি শাখার শিক্ষা ও এইচআরএম সম্পাদক সোহাগ আহমেদ বলেন, আমাদের আজকের এ দুই দফা দাবি দীর্ঘদিনের কিন্তু এখনো পূরণ হয়নি। প্রশাসন দিবে দিবে করে শুধু তালবাহানা করছে। আবাসন বৃত্তি কবে থেকে দিবে তার সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে এবং কারা পাবে সেটা জানাতে হবে। জকসু আইন ও নির্বাচনের নীতিমালা হচ্ছে এরকম কিছু শুনেছি কিন্তু তার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ জানায় নি। আমরা দুই দফার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে চাই।
আপ বাংলাদেশের জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে সম্পূরক বৃত্তি ও জকসুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন ও মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা শিকার হয়ে আসছি আমরা। আবাসন বৃত্তি আমাদের অধিকার কারো দয়া নয় আর জকসু শিক্ষার্থীদের গনতান্ত্রিক অধিকার। আমাদের দুই দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাসান সজিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রহসন গত এক বছর ধরে চলছেই। যমুনা আন্দোলনের পরেও আমাদের সম্পূরক বৃত্তি এখনো দেওয়া শুরু হয়নি। সারা দেশে যখন ছাত্রসংসদ নির্বাচনের ডামাডোল, সেখানে আমাদের জকসুর নীতিমালা এখনো অনুমোদন করতে পারেনি প্রশাসন। আমাদের ন্যায্য অধিকার যদি প্রশাসন না দেয়, তবে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই - ‘দড়ি ধরে মারবো টান, প্রশাসন হবে খানখান।'
শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, আমরা যখনই যৌক্তিক আন্দোলনে নামি তখনই প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দেয় কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ফলাফল তারা দেখাতে পারেনি। আমরা তাদের কর্মদক্ষতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে অবগত হয়ে গেছি। আমরা দুই দফা দাবিতে বসেছি- দাবি আদায় হওয়া আগ পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরছি না।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল বুধবার দেওয়াল লিখন কর্মসূচি এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে। দাবি আদায় না হলে রবিবার থেকে টানা ২৪ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত