ভয়কে জয় করে করোনার টিকা গ্রহণে সিলেটের মানুষের মধ্যে বাড়ছে আগ্রহ। টিকা গ্রহণের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেওয়ায় সাধারণ মানুষের মন থেকে কেটে গেছে ভয়। তাই সময়ের সাথে সাথে কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে টিকাগ্রহণকারীদের ভিড়। তবে সিলেটে টিকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ লক্ষ করা গেছে রাজনীতিবীদদের মাঝে। টিকা নিতে কর্মীদের বহর নিয়ে তারা আসছেন কেন্দ্রে। উৎসবমুখর পরিবেশে নেতাকর্মীরা টিকা নিচ্ছেন।
সিলেট নগরীতে করোনার টিকা কেন্দ্র দুটি। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভাগীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে করোনার টিকা। গত রবিবার করোনার গণটিকার উদ্বোধনী দিনে দুই কেন্দ্র মিলে টিকা নিয়েছিলেন ৫২৯ জন। প্রথম দিন যারা টিকা নিয়েছেন তাদের শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও বেড়ে যায় টিকা নিয়ে আগ্রহ।
দ্বিতীয় দিন সোমবার আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক লোক নেন করোনার টিকা। ওইদিন নগরীর দুই কেন্দ্র মিলে টিকা নেন ১ হাজার ২১৯ জন। এর মধ্যে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ হাজার ৬৯ জন ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ১৫০ জন টিকা নেন।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবার টিকাগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৪৯ জনে। যাদের ১ হাজার ৭৭৮ জন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে ও ২৭১ জন সিলেটের বিভাগীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেন। বুধবার সকাল থেকে টিকা গ্রহনেচ্ছুরা ভিড় করেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও টিকা গ্রহণকারীদের চাপ সামলাতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় সংশ্লিষ্টদের। বুধবার নগরীর দুই কেন্দ্র মিলিয়ে টিকা নেন ২ হাজার ৯৩২ জন। এর মধ্যে ওসমানী হাসপাতালে ২ হাজার ৬৫১ জন ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ২৮১ জন।
এদিকে, সিলেটে করোনার টিকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ পরীক্ষিত হয়েছে রাজনীতিবিদদের মাঝে। বিরোধী দল বিএনপি নেতাকর্মীদের টিকা কেন্দ্রে খুব বেশি যেতে দেখা না গেলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা নিচ্ছেন।
গত চারদিনে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, সহ সভাপতি শাহ ফরিদ আহমদ, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক আবদুর রহমান জামিল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠুসহ কয়েকশত নেতাকর্মী করোনার টিকা নিয়েছেন। কর্মীদের বহর নিয়ে তারা কেন্দ্রে এসে টিকা নিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে অনেক সময় স্বাস্থ্যবিধিও হুমকির মুখে পড়ছে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, করোনার টিকা নিয়ে বিএনপি নানা অপপ্রচার চালিয়ে ছিল। কিন্তু মানুষ তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে স্বত:স্ফূর্তভাবে টিকা নিচ্ছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় দিন দিন মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। এখন পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তারা সবাই সুস্থ আছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই