সিলেট চলছে টানা বর্ষণ ও প্রলংয়কারী বন্যা। চারদিকে পানির ভয়াল গ্রাস। মহাবিপর্যয়ে জনপদ। মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া বানের সঙ্গে ঘটছে টিলা ধস। চলতি মহাদুর্যোগের ভয়াল থাবা এবার পড়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সিলেটের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মুরারিচাঁদ কলেজে (এমসি কলেজ)।
টানা বর্ষণে ধসে পড়েছে মুরারিচাঁদ কলেজের প্রিন্সিপালের বাংলো সংলগ্ন থেকারের টিলা। ২৫০ বছর আগে ১৭৭২ সালে এখানে ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর উইলিয়াম মেইকপেস থেকারের অফিস ছিল। মুরারিচাঁদ কলেজের প্রিন্সিপালের বাংলোটি তৈরি হয়েছে ১৯২১ সালে।
শনিবার দুপুর পৌনে একটার প্রিন্সিপালের শতবর্ষী বাংলোর টিলার ধস শুরু হয়। প্রায় ১০০ ফুট টিলা ভেঙ্গে গাছপালাসহ নিচে চলে গেছে। ধসের ফলে বাংলোর উত্তরদিকে প্রায় ২০/২৫টি গাছ উপড়ে মাটিসহ নিচে চলে গেছে। ধস ঠেকাতে বাংলোতে কলেজের কর্মচারীরা বড় বড় বাঁশ এনে বেড়া দিয়ে চেষ্টা চালায়।
সরেজমিন দেখা যায়, অধ্যক্ষ বাংলো সংলগ্ন এ টিলাটি প্রায় ১০০ ফুট নিচে গাছপালাসহ ধসে পড়েছে। এতে পুরো বাংলোটি অরক্ষিত হয়ে পড়লে কলেজ কর্মচারীরা ওই অংশে বেশ কয়েকটি বাঁশের বেড়া দিয়ে রেখেছেন। বর্তমানে বাংলোটি রক্ষণাবেক্ষণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
রবিবার এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সালেহ আহমদ জানান, শুক্রবার বেলা পৌনে ১টার দিকে তিনি টিলা ধসের ঘটনা শুনতে পান। সেদিনই ধস ঠেকাতে বাংলোর টিলায় কলেজের কর্মচারীরা ৪০টি বড় বড় বাঁশ এনে বেড়া দেন। কিন্তু এটি স্থায়ী কোন সমাধান নয়। আজ শনিবার এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোস্তাক আহমদ ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিমসহ আরও অন্যরা এ টিলা পরিদর্শন করেন। তারা বলেছেন, এই বাংলো রক্ষায় শক্ত পাইলিংসহ আরও নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
অধ্যক্ষ প্রফেসর সালেহ আহমদ আরও জানান, এটি শুধু সিলেট নয় পুরো দেশের একটি ঐতিহ্য হিসেবে চিহ্নিত। ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। এই বাংলো রক্ষায় যা প্রয়োজন সে ধরনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত