বন্যার পানি কিছুটা কমার পর আশ্রয় কেন্দ্র থেকে নিজ গৃহে যেতে শুরু করেছে মানুষ। বাড়িতে যাওয়ার পর অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত রোগ। বিশেষ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় পুরো উপজেলা। এতে করে উপজেলার টিউবওয়েল ও নলকূপগুলোও বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন বন্যায় তলিয়ে যাওয়া টিউবওয়েলের পানি ও বন্যার পানি পান করায় বাড়ছে পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে একটি সিটও খালি নেই। রোগীদের চাপে পুরুষ ওয়ার্ডে শিশুদের ভর্তি করা হচ্ছে। খবর নিয়ে জানা যায়, বন্যার পর পানিবাহিত রোগীতে ভরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি বাহিত রোগীর সংখ্যা ছিল ২১ জন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৪ জন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী পারভেজ খান জানান, এখন পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৫৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে গাড়িতে করে বিশুদ্ধ পানি বিতরণ হচ্ছে। এছাড়াও বন্যার পানি থেকে উপরে উঠা টিউবওয়েলগুলোকে জনবল অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, একটি এনজিও থেকে ২০টি টিউবওয়েলের ট্রিটমেন্ট করবেন বলে তারা আমাদেরকে জানিয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কামরুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের বেশিরভাগ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। তাদেরকে আমরা নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছি। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আমাদের মেডিকেল ক্যাম্প করা হচ্ছে। বন্যা আসার পর থেকে প্রায় ৩০টিরও বেশি মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়েছে। এখনো এগুলো চলমান রয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার পিস ওআরএস বিতরণ করা হয়েছে। আরো ২ লক্ষ পিস ওআরএস অর্ডার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমাদের ৬টি ইউনিয়নই বন্যায় প্লাবিত। বন্যার পানি কমার পর রোগীদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক