গেল কয়েক বছর ধরেই ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মানুষজনকে। বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলোর আয়ের অন্যতম উৎস এই পশুর চামড়া হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় তাদের। বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে দিনশেষে তা বিক্রি করতে হয় পানির দামে।
তবে এবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মাদ্রাসার মাধ্যমে সংগৃহীত পশুর চামড়া সিসিকের উদ্যোগে সংরক্ষণ করে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ঘোষণা অনুযায়ী এবার চামড়া সংরক্ষণও করা হয়েছে।
এবার কোরবানির গরুর চামড়া ১০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ছাগলের চামড়ার জন্য কেউ মূল্যই দিতে চায়নি। ফলে কেউ কেউ ফেলে দিয়েছেন, আবার কেউ বিনামূল্যে ব্যবসায়ীদের কাছে রেখে গেছেন ছাগলের চামড়া। অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী সারাদিন বাসা-বাড়িতে গিয়ে যে দামে চামড়া ক্রয় করেছেন বিকালে আড়তদারের কাছে বিক্রি করে সেই দামও পাননি।
এদিকে, ঈদের আগেই সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবছর যেসব মাদ্রাসা কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করবে তারা চাইলে সেগুলো সিসিকের কাছে জমা দিতে পারবে। সিটি কর্পোরেশন নিজ দায়িত্বে নিজস্ব পরিবহন দিয়ে চামড়াগুলো এনে সংরক্ষণ করবে। পরে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষদের তাদের পাওনা পরিশোধ করবে।
এক্ষেত্রে পরিবহন ও প্রক্রিয়াজাত খরচ বাবতও কোনো টাকা কেটে রাখবে না সিসিক। সিটি কর্পোরেশনের এমন ঘোষণার পর নগরীর বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে কোরবানির পশুর কয়েক হাজার চামড়া সিসিকের কাছে জমা দেয়া হয়। লবণ দিয়ে সেসব চামড়া সিসিকের ময়লা পরিশোধনাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিসিকের পরিচ্ছন্নতা শাখার প্রধান কর্মকর্তা হানিফুর রহমান জানান, যেসব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের সংগৃহীত পশুর চামড়া জমা দিয়েছেন সেগুলো হিসেব করে রাখা হয়েছে। প্রক্রিয়াজাতকরণের পর চামড়া বিক্রি করে তাদের টাকা পরিশোধ করা হবে। সিটি কর্পোরেশন এই উদ্যোগ নেওয়ায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ লাভবান হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর