বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গিয়েছিল সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়ক থেকে বন্যার পানি নামলেও ভাঙনের কারণে ওই সড়ক দুটি দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। সড়ক দুটি মেরামতে স্থানীয় প্রশাসনও তড়িৎ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ও উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
এমতাবস্থায় সড়ক দুটি সংস্কারে এগিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন। স্বেচ্ছাশ্রমে তারা সড়ক দুটি মেরামত করছেন। স্থানীয় লোকজনের এই প্রচেষ্টা প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
চলতি বন্যায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিলেটের কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলা ফেঞ্চুগঞ্জ। বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, হাটবাজার ও উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদর ভেসে যায় বুক সমান পানিতে। বন্যার পানির স্রোতে উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের ইলাশপুর এলাকায় মল্লিকপুর-মানিককোনা সংযোগ সড়ক এবং উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মল্লিকপুরে চানপুর-মানিককোনা সড়ক ভেঙে যায়।
গেল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও ভাঙনের কারণে সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ভাঙন দুটির কারণে উত্তর কুশিয়ারা ও উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের লোকজন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এতে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন উপজেলার লোকজন।
সূত্র জানায়, মল্লিকপুর-মানিককোনা সংযোগ সড়কটি সড়ক ও জনপথের এবং চানপুর-মানিককোনা সড়ক এলজিইডি’র আওতাভুক্ত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেরামতের কোন উদ্যোগ নেননি। এতে স্থানীয় লোকজনের ভোগান্তি আরও বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় স্থানীয় লোকজন সওজ ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে না থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক দুটি মেরামতের উদ্যোগ নেন।
গত রবিবার থেকে স্থানীয় লোকজন ভাঙন দুটি মেরামতের কাজ শুরু করেন। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মেরামত কাজ অব্যাহত ছিল।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভাঙন দুটি মেরামতে কেউ নগদ টাকা, কেউ বস্তা, ইট ও বালু দিয়ে সাহায্য করছেন। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই তারা শ্রম দিয়ে মেরামত কাজে শরিক হচ্ছেন। ফলে সড়ক মেরামত নিয়ে এলাকায় সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশে উৎসবের আমেজ চলছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই কল্যাণমূলক এই কাজে অংশ নিচ্ছেন। আজকালের মধ্যে মেরামত কাজ শেষ করে সড়ক দুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশাপ্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু বলেন, ‘এই সড়ক দুটি উপজেলার লোকজনের যাতায়াতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বন্যায় সড়ক দুটি ভেঙে যাওয়ায় উপজেলাবাসী মারাত্মক ভোগান্তিতে ছিলেন। যান চলাচল বন্ধ থাকায় স্থানীয় লোকজনদের মারাত্মক কষ্ট করে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক স্থানে নিচু কালভার্টের কারণে নৌকাও চলাচল করছে না। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়ক দুটি মেরামতে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় ভোগান্তিে এড়াতে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ শুরু করেন। সবাই সাধ্যমতো সহযোগিতা করায় সড়ক দুটির ভাঙন ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন