চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করলেও বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান দাবি করেছেন, মাত্র পাঁচ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে পেরেছেন। বাকি ভোট ইভিএমের মাধ্যমে ডিজিটাল জালিয়াতি করে দেখানো হয়েছে বলে দাবি তার।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দলীয় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ‘ভেটা জালিয়াতির চিত্র’ তুলে ধরেন আবু সুফিয়ান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, প্রশাসন ও দলীয় সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে তথাকথিত ইভিএমের মাধ্যমে ডিজিটাল জালিয়াতি করেছে। এতে আবারও প্রমাণ হয়েছে, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট ডাকাতি করা যায়। এটি মধ্যরাতের নির্বাচনের মতো আরেকটি কৌশল। ইভিএম এখন মহাপ্রতারণার নতুন পদ্ধতি। এতে ডিজিটাল ডাকাতির পর অভিযোগ করারও সুযোগ নেই। একজন ভোটার কোথায় ভোট দিলেন তা নিজে জানারও সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ২২ শতাংশ ভোটের মধ্যে ৫ শতাংশ দিয়েছেন ভোটাররা আর ১০ শতাংশ ভোট দিয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার নিজে। বাকিগুলো ভোট কেন্দ্র দখল করে পাসওয়ার্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-সন্ত্রাসীরা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্র দখল করে ইভিএমের পাসওয়ার্ড নেওয়ার অভিযোগও তুলে ধরেন আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, নগরীর হামজারবাগ রহমানিয়া স্কুল কেন্দ্রে বেলা ১২টার সময় ২ নম্বর কক্ষে কয়েকজন বহিরাগত প্রবেশ করেন। তারা নির্বাচন কমিশনের আইটি বিশেষজ্ঞ ও প্রিজাইডিং অফিসার ছোটন চৌধুরীকে নিয়েই সেখানে যান। তার মোবাইল থেকে নির্বাচন কমিশনের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে ডিভাইস নম্বর দিয়ে কোড অথবা পাসওয়ার্ড চাইলে +৮৫৮৪৭৭৬৭+ নম্বরটি দেওয়া হয়। তারা এসময় বলতে থাকেন, ১০ শতাংশ ম্যাচিং কোড দিয়ে তাড়াতাড়ি ভোট নিয়ে নেন। তখন অন্যজনের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। অবৈধভাবে শুরু করা ভোটার নম্বর ৪২২, ৫০২, ৪৯৯ ও ৫৮০। এ উপনির্বাচনের মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশনকে ভোটাধিকার হরণের প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিণত করেছে।
ঘোষিত ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে সুফিয়ান বলেন, ‘জনগণের করের টাকা খরচ করে সরকার ও নির্বাচন কমিশন তামাশা করেছে। তামাশার নির্বাচন জনগণ মেনে নেয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিষ্টার মীর মো. হেলাল উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলী আব্বাস, সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি মাহবুবুল আলম, নাজিম উদ্দিন আহমদ, সি: যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইসকান্দর মীর্জা, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল