মারাত্মক সেই করোনা ভাইরাসের কারণে এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন নিয়েও আশংকায় রয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। করোনা ভাইরাসসহ নানাবিধ কারণে এই নির্বাচন স্থগিতের জন্য ‘খোদ’ মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীরাও সম্প্রতি চট্টগ্রামে সিইসির সভায় উত্থাপন ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে দাবি তুলছেন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) থেকেও ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এসব নিয়ে সিইসিসহ প্রার্থীরা শংকা এবং ব্যাপক আলোচনায় আছে। নির্বাচন কমিশন চসিকের নির্বাচন নিয়ে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এখনও পর্যন্ত কোন ধরণের অ্যাফেক্ট পড়েনি এবং নির্বাচন বিষয়ে দুই-এক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা জানান। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের কেক কেটে নির্বাচন ভবন থেকে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুই-একদিন দেখি। কারণ চসিকসহ নানাবিধ নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ দিকে। আমরা প্রার্থীদের অনুরোধ করেছি, তারা যাতে জনসমাগম এড়িয়ে চলেন। যেন বিকল্পভাবে ভোটারদের কাছে ভোট চান। তিনি বলেন, যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন অবশ্যই বিবেচনা করব। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাচ্ছি নির্বাচনটা হয়ে যাক।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামে প্রধান নির্বাচন কমিশনের একটি সভায় বলেছিলেন, নির্বাচনের আগে টানা বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্বে আতংকিত। দেশের মানুষও আতংকিত-আক্রান্তও হচ্ছে। চসিকের নির্বাচনে এই ভাইরাসের সমস্যা হতে পারে। তাই আপাতত নির্বাচন স্থগিত করতে নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে। নির্বাচন হলে হাজার হাজার ভোটার আতংকিত হয়ে ভোট কেন্দ্রেও যেতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
ইসালামী আন্দোলনের চসিকের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম ক্ষোভের সাথে বলেন, নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের কয়েকজন মানুষ মারা না গেলে চসিক নির্বাচন সরকার বন্ধ করবে না। সরকার বা নির্বাচন কমিশন চায়, মানুষ মারা যাক। সিইসির সভায়ও বলেছি চসিক নির্বাচন স্থগিত করতে। তবে আক-কালকের মধ্যে লিখিত জানাবেন বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার আগে ভাগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করাসহ গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাও স্থগিত করেছে। মুজিববর্ষ পালনেও ছোট করেছে সরকার। চসিকের প্রথম ইভিএম ভোটের পদ্ধতিতে কয়েক হাজার ভোটার বৃদ্ধাঙ্গুলির চাপ দিয়ে ভোট দেবেন। এতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলে তা ওই মেশিন ব্যবহারকারী সবার দেহে নিমিষেই ছড়িয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হাসান শাহরীয়ার কবীর বলেন, হাতের ছোঁয়া থেকেই করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই বারবার হাত ধোয়ার কথাটি বলছি। ভোটের ইভিএম মেশিনে অনেকজনের ছোঁয়া লাগতে পারে। এতে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে।
চট্টগ্রাম নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের প্রধান রিটানিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, আপাতত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যকেই ফলো করছি। কেন্দ্র থেকে পরবর্তী কোন সিদ্ধান্ত আসলে তা পরে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার