চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ের কামাল উদ্দিন নামে এক রিক্সাচালক। শুক্রবার বিকালে দেখা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘কই যাবেন, উঠেন ভাই।’ তিনি বললেন, ‘সারাদিন মাত্র ১০০ টাকা আয় করছি। কি করব বুঝছি না।’ কামাল উদ্দিনের মত এমন রিক্সাচালক, খেটে খাওয়া দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা হাতেগুণা নয়।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ১০ দিনের অঘোষিত ‘লকডাউন’ চলছে। সর্বত্র এখন জনমানব শূন্য। ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ এখন চরম বিপাকে। ক্রমে নাভিশ্বাস উঠছে দিন মজুরদের। কর্মহীন হয়ে পড়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবে সরকারি উদ্যোগে করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বাসায় পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব সহায়তা দিয়ে আসবেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ১৭ হাজার পরিবারকে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। শনিবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে। ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা আরও বাড়িয়ে সবার কাছে সরকারি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে নগরের ৪১ ওয়ার্ডে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়া হবে। তাছাড়া উপজেলায় চাল বরাদ্দের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে। তারা চাল ছাড়া অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে ছোট ছোট প্যাকেট করে দরিদ্র দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসব সহায়তা দিয়ে আসবেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার দরিদ্র দিনমজুর ১৭ হাজার পরিবারকে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী আছে। এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। খেটে খাওয়া মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে সে জন্য সরকার তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২ হাজার পরিবারে খাবার দেওয়া হবে। তাছাড়া, মিরসরাইয়ের জন্য ১ হাজার ৩০০, সীতাকুন্ডে ১ হাজার ২০০, ফটিকছড়িতে ১ হাজার ৭০০, রাউজানে ৮০০, রাঙ্গুনিয়ায় ১ হাজার, হাটহাজারীতে ৮০০, বোয়ালখালীতে ৫৫০, পটিয়ায় ৯০০, আনোয়ারায় ৮০০, চন্দনাইশে ৭০০, লোহাগাড়ায় ১ হাজার, সাতকানিয়ায় ১ হাজার, বাঁশখালীতে ১ হাজার ৪০০, সন্দ্বীপে ১ হাজার ৫০০, কর্ণফুলীতে ৩৫০টি পরিবারকে পরিবারকে ১০ কেজি চালের পাশাপাশি ডাল, তেল, চিনি, পিয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা যায়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
