শিশু মন। কোমল প্রাণ। শিশুর মন পড়ে থাকে মা-বাবার দিকে। এটিই প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম, চিরাচরিত ধারা। বাবা মায়ের কাছে থাকতেই পছন্দ। কিন্তু এমন পছন্দটা কাল হয় একটি শিশুর জন্য। বাবা-মায়ের সঙ্গে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় বেধড়ক পেটানো হয় শিশু শিক্ষার্থী মো. ইয়াসিনকে। মারধরে অভিযুক্ত মাদরাসার শিক্ষকের নাম মো. ইয়াহিয়া।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার মারকাজুল কোরআন ইসলামি একাডেমি মাদরাসায় গত মঙ্গলবার এ নির্মম ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার থেকেই শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন শিশুটিকে উদ্ধার করে। তবে পরিবারের অনুরোধে মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, মারকাজুল কোরআন ইসলামি একাডেমি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইয়াসিনকে গত ৮ মার্চ বিকেলে দেখতে যান মা পারভিন আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ জয়নাল। কিন্তু ফেরার সময় ছোট্ট শিশুটি মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। এক পর্যায়ে শিশুটি মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাদরাসার শিক্ষক মো. ইয়াহিয়া। মূল ফটকের বাইরে যাওয়ায় শিশুটিকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন তিনি। এসময় শিশুটির কোনো আকুতিই শুনেননি ওই শিক্ষক।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করি এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করি। কিন্তু পরিবার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নিতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে শিক্ষককে ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার ছিল ইয়াসিনের জন্মদিন। তাই বুধবার সকালে আবারও শিশুটিকে দেখতে যাই। আমরা চাই, ছেলেটার মানসিক যন্ত্রণাটা দূর করতে। তাই জন্মদিনে কেক-চকলেট নিয়ে তাকে আগের দিনের নির্যাতনের চিত্র ভুলাতে চেষ্টা করি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন