চট্টগ্রাম নগরীতে অবৈধভাবে চলাচলকারী রিকশা শনাক্ত করতে ডিজিটাল নম্বরপ্লেট সংবলিত বারকোড বসানো হচ্ছে। কেমিস্ট সিজিডি কনসোর্টিয়াম নামে একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের আওতায় বারকোড, রিকশা ও চালকের লাইসেন্সের জন্য ৪৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে রিকশাচালক ও মালিকদের। এই অর্থ আদায়ের জন্য ওয়ান ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে চসিক।
চট্টগ্রামের মূল সড়ক, শাখা সড়ক ও অলিগলিতে প্রতিনিয়ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনুমোদনহীন রিকশা। এসব রিকশাগুলোর বেশিরভাগ অবৈধ হলেও নানা সীমাবদ্ধতায় ব্যবস্থা নিতে পারে না ট্রাফিক বিভাগ। বিশেষ করে নগরীর প্রত্যন্ত এলাকা ছাড়াও চকবাজার, বহদ্দারহাট, ইপিজেডসহ ব্যস্ততম অনেক এলাকায় ব্যাটারি রিকশার দৌরাত্ম্যে দিশেহারা অন্য গাড়ির চালকরা। এসব রিকশার কারণে প্রতিনিয়ত যানজট তৈরি হচ্ছে, ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বারকোড বসানোর ফলে অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চসিক জানায়, ২০২১ সালে নগরীর যানজট নিয়ন্ত্রণ ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুমোদনহীন রিকশার দৌরাত্ম্য কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় চসিক। এর ধারাবাহিকতায় গত বছর ডিজিটাল নম্বরপ্লেট সংবলিত বারকোড বসাতে রিকশার নিবন্ধন ও লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করে সংস্থাটি। কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে লাইসেন্স ফি নেওয়ার জটিলতায় আটকে ছিল প্রকল্পটি। ওয়ান ব্যাংকের সাথে চুক্তির ফলে আগামী জুলাই থেকে রিকশায় বারকোড দেয়া যেতে পারে।
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আজ (মঙ্গলবার) সকালে ওয়ান ব্যাংকের সাথে চুক্তিটি সম্পাদন হয়েছে। এখন থেকে বারকোড সংক্রান্ত সকল প্রকার অর্থ ওয়ান ব্যাংক গ্রহণ করবে। ফলে রিকশায় বারকোড বসানোর কার্যক্রম চালু করতে আর কোনো বাধা নেই। জুলাই মাস থেকে বারকোড দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
চসিক কর্মকর্তারা জানান, কেমিস্ট সিজিডি কনসোর্টিয়াকে ১ লাখ ৬ হাজার রিকশার বারকোড তৈরির জন্য কাজ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ৭০ হাজার পুরাতন রিকশার তথ্য সফটওয়ারে আপডেট করেছে। বাকি রিকশাগুলোকে নতুন লাইসেন্স দেয়া হবে। বারকোড বসানো হলে বৈধ রিকশা চিনতে সহজ হবে। অবৈধগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সুবিধা হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কেমিস্ট সিজিডি কনসোর্টিয়ামের সহ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান জানান, বারকোড নিতে হলে প্রতিটি রিকশার মালিক ও চালককে রেজিস্ট্রেশন ফি ৩০০ টাকা, লাইসেন্স ফি ১০০ টাকা ও আবেদন ফরম বাবদ ৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। যারা ৪৫০ টাকা পরিশোধ করবেন তাদের বারকোড সংবলিত ২ বছর মেয়াদের রিকশার লাইসেন্স দেয়া হবে। এরপর প্রতিবছর ১০০ টাকা দিয়ে নবায়ন করতে হবে। পাশপাশি রিকশা চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাবদ ৫০ টাকা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই