বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) বিনামূল্যের সরকারি ওষুধ রোগীদের মাঝে বণ্টন না করে আত্মসাতের সঙ্গে হাসপাতালের নার্স-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। এটি পুরনো অভিযোগ হলেও এতদিন দাপ্তরিকভাবে এটি প্রমাণ করা যায়নি। তবে গত শুক্রবার আয়া শেফালী বেগমের বাসা ও পরদিন শনিবার হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে অবৈধভাবে মজুদ রাখা বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ উদ্ধার এবং এসব ঘটনায় ওই ওয়ার্ডের আয়া শেফালী ও ইনচার্য নার্স বিলকিস বেগমকে গ্রেফতারের পর থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসতে শুরু করে। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি ওষুধ চুরির সঙ্গে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এছাড়া ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের গাফেলতিও রোগীদের মাঝে ওষুধ বণ্টন না হওয়ার অন্যতম কারণ বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। গত সোমবার বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলামের কাছে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। পরিচালক ডা. সিরাজুল ইসলাম তদন্ত কমিটির কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ওষুধ পাচারের সঙ্গে শুধু নার্স কিংবা কর্মচারী নয়, ওষুধ ভাণ্ডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। রোগীদের মধ্যে ওষুধ বণ্টন হচ্ছে কি-না তা তদারকিতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড চিকিৎসকদের গাফেলতি রয়েছে। এসব অভিযোগ বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি আইনি তদন্তেরও সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
এদিকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে বিপুল পরিমাণ ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেন পরিচালকের অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিচালকের অভিযোগটি শুক্রবার এক আয়ার বাসা থেকে ওষুধ উদ্ধারের পর পুলিশের দায়ের করা মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। দু'টি অভিযোগের তদন্ত এক সাথে চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৬ মে, ২০১৭/মাহবুব