দুর্নীতির মাধ্যমে ৯২ লাখ টাকা আত্মসাতের পৃথক দুটি মামলায় বরিশালের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
উচ্চাদালতের দেয়া জামিনের মেয়াদ শেষে গত বুধবার বিকেলে ডা. খায়রুল আলম ও সাবেক জেলা হিসাব রক্ষক হাবিবুর রহমান জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সৈয়দ এনায়েত হোসেন ডা. খায়রুল আলমের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। হাবিবুর রহমান বৃদ্ধ হওয়ায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৮ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযুক্তরা বরিশাল বরিশালে কর্তব্যরত থাকাকালীন ইউডিসিএল ওষুধ সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহবান করেন। এ সময় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে ওষুধ ক্রয়ের বিল দেখিয়ে পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতির মাধ্যমে ৭৯ লাখ ৭০ হাজার ৪শ ৯৯ টাকা ৬০ পয়সা এবং ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আরো ১১ লাখ ৯৩ হাজার ৫শ ৯৭ টাকা আত্মসাত করেন।
এ ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে খায়রুল ও হাবিবুরসহ ঠিকাদার ও ওষুধ সাপ্লাইয়ার্স সাইদুর রহমান খান, সাবেক সিভিল সার্জন আফতাব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব একাউন্টস অডিটর রুহুল আমিন চৌধুরী, একই কার্যালয়ের ডিভিশনাল সুপার কাজী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি এবং এদের মধ্যে শুধুমাত্র আফতাব বাদে বাকি ৫ জন সহ সদর হাসপাতালের সাবেক ডেন্টাল সার্জন সৈয়দ মাহবুব হাসান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন, বরিশাল নগরীর বাংলা বাজার এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার আমিনুর রহমান চৌধুরীকে অভিযুক্ত করে কোতোয়ালী মডেল থানায় গত বছর ২১ মার্চ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দুদকের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ২০ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগের সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় দুটি মামলা থেকে অভিযোগপত্রে রুহুল আমিন ও কাজী মিজানুর রহমানকে এবং ২য় মামলায় সৈয়দ মাহবুবকে অব্যহতির সুপারিশ করা হয়। আদালত সুপারিশ মঞ্জুর করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই একটি এবং ১০ আগস্ট অপর মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর নির্দেশ দেন। দুটি মামলাই খায়রুল ও হাবিবুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হলে তারা দুজন গত ২৩ আগস্ট উচ্চাদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণ দেবনাথ গঠিত দ্বৈত বৈঞ্চ উভয় মামলায় দুই জনকেই ৬ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। জামিন শেষে আদালতে হাজির হলে বিচারক ওই আদেশ দেন।