রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে আসামি জাফর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জাল হোসেন আসামির এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
এর আগে, আসামি জাফরকে আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে, রবিবার রাতে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আরও তিন আসামিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত আলী সাংবাদিকদের জানান, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামি চাঁদপুর সদরের রামদাশদী পাটোয়ারী বাড়ির ইয়াসিন পাটোয়ারীর ছেলে জাফর (১৮)।
এছাড়া রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বরগুনার তালতলী উপজেলার গাবতলী হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা শাহীন (৩১), ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার দরশা গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (২৮) ও উত্তর বাড্ডা কাঁচা বাজারের ফারুকের মুদি দোকানের কর্মী বাপ্পী (২১)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২০ জুলাই) সকালে উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে ওই নারীকে পিটিয়ে আহত করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় শনিবার বাড্ডা থানায় নিহতের ভাগনে নাসির উদ্দিন অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, অতর্কিতভাবে ওই নারীকে স্কুলের অভিভাবক, উৎসুক জনতাসহ অনেকে গণপিটুনি দেয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪০০-৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি জড়িত।
জানা গেছে, নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর ১১ বছরের এক ছেলে ও চার বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। আড়াই বছর আগে স্বামী তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে ছেলেমেয়েকে নিয়ে মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকায় একটি বাড়িতে থাকতেন। চার বছর বয়সী মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য তিনি এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে ঘুরছিলেন। এ কারণেই তিনি বাড্ডার ওই স্কুলটিতে যান।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম