১৪ জুলাই, ২০২০ ১৫:১৯

আলোচিত সগিরা হত্যা: জামিন মেলেনি মারুফ রেজার

অনলাইন ডেস্ক

আলোচিত সগিরা হত্যা: জামিন মেলেনি মারুফ রেজার

সগিরা মোর্শেদ সালাম

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় সংঘটিত বহুল আলোচিত সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যা মামলার আসামি মারুফ রেজাকে জামিন দেননি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।

৩১ বছর আগে এ হত্যা মামলার মঙ্গলবার জামিন শুনানি শেষে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন না দিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীকে নিয়মিত বেঞ্চে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

আদালতে আসামির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদল মতিন খসরু এমপি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজউদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।

হত্যাকাণ্ডের ৩১ বছর পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে চারজনের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকার নিম্ন আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র গত ৯ মার্চ আমলে নেন আদালত। এরপর মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ১৫ মার্চ দিন নির্ধারণ করা হয়।

নির্ধারিত দিনে আসামিপক্ষ সময় আবেদন করায় আদালত শুনানির দিন পিছিয়ে ১৬ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন। কিন্তু অভিযোগ গঠনের শুনানির আগেই দেশে করোনা সংক্রমণের  বিস্তার ঘটায় ২৬ মার্চ থেকে নিম্ন আদালতসহ সারা দেশের নিয়মিত আদালত বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আর হয়নি।

এ অবস্থায় মামলার আসামি জনৈক মারুফ রেজা জামিনের আবেদন করলেন।

আসামি মারুফ রেজা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল ইসলামের নিকটাত্মীয় বলে জানা যায়। এছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন, নিহত সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান।

১৯৮৯ সালের ২৫ এপ্রিল নিহত হন গৃহবধু সগিরা মোর্শেদ সালাম। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী রমনা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় তদন্ত শেষে মন্টু ওরফে মরণের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। সগিরার সোনার চুড়ি ছিনতাই করতে গিয়ে তাকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।

এরপর ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। এ মামলায় সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণকালে ঘটনার সঙ্গে মারুফ রেজার সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসায় অধিকতর তদন্তের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত ওই বছরের ২৩ মে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট ১৯৯১ সালেল ২ জুলাই মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। একইসঙ্গে মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট আরেক আদেশে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর গতবছর ২৬ জুন ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে অধিকতর তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় পিবিআই তদন্তে নামে। এতে  হত্যার সঙ্গে নিহত সগিরার স্বামীর ভাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী, ভাইয়ের স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন ও শ্যালক আনাস মাহমুদ রেজওয়ান এবং মারুফ রেজার নাম বেরিয়ে আসে।

পুলিশ গত বছর ১০ নভেম্বর রেজওয়ান, ১৩ নভেম্বর হাসান আলী ও তার স্ত্রী এবং মারুফ রেজাকে গ্রেফতার করে। এই চারজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর পিবিআই গত ১৪ জানুয়ারি চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর