রংপুরে চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রবাহিত হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষের মতোই কাবু হয়ে পড়ছে রংপুর চিড়িয়াখানার ৩১ প্রজাতির ২৫৩টি প্রাণি। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, গরমে প্রাণিগুলোকে বিশেষ যত্ন নেয়া হচ্ছে। পানি, স্যালাইন, ভিটামিন দেয়া হচ্ছে। রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উঠা নামা করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা গেছে, গরমে মানুষের মতোই চিড়িয়াখানার প্রাণিদের হাঁসফাঁস উঠছে। গরমে প্রাণিগুলো এক প্রকার নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। প্রতিটি খাঁচার ভেতরে পশুপাখি গুটিসুটি হয়ে বসে আছে। খাঁচার ভেতরে দেখা গেছে, গরম কাতর সিংহ-সিংহীকে।
অন্যদিকে, বানরসহ অন্যান্য প্রাণি খাঁচার কোনায় গুটসুটি হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। হরিণ, ঘোড়া, ময়ূর, বাঘ, সিংহ, বানরসহ সব পশুপাখিগুলো একটু শীতল পরশের জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছে। এসব প্রাণি দর্শনার্থী মানুষের দিকে হা করে তাকিয়ে রয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্র ৩৬ ডিগ্রী থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর চিড়িয়াখানায় ৩১ প্রজাতির প্রায় ২৫৩ প্রাণি ও পশুপাখি রয়েছে। চিড়িয়াখানায় যে সব প্রণি রয়েছে সেগুলো হলো- সিংহ,জলহস্তি ৩টি, ময়ুর ৮টি, হরিণ ৫৯টি, অজগর সাপ দুটি, ইমু ৩টি, উটপাখি ১টি, বানর ৯টি, কেশওয়ারি ১টি, গাধা ৮টি, ঘোড়া ২টিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি উল্লেখযোগ্য। দেশে দুটি সরকারি চিড়িয়াখানের মধ্যে রংপুর একটি। এসব প্রাণিগুলোর মধ্যে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছে উটপাখি, হনুমন, কেশওয়ারি। এরা সঙ্গীর অভাবে বংশ বিস্তার করতে পারছে না। দীর্ঘদিন থেকে কর্তৃপক্ষ এই প্রাণিগুলোর সঙ্গী আনার জন্য ঢাকায় আবেদন করলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। এছাড়া চিড়িয়াখানার একমাত্র বাঘিনী শাওন বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে। বাঘিনীটিও দীর্ঘদিন সঙ্গীহীন অবস্থায় ছিল। এছাড়া কিছুদিন আগে সঙ্গী হীন অবস্থায় ভল্লুকটি মারা যায়।
প্রয়াত জাপা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্টপতি এইচ এম এরশাদ রংপুর নগরীর হনুমানতলা এলাকার ৮৯ সালে গড়ে তোলেন রংপুর চিড়িয়াখানটি। এটি দর্শনার্থীদের জন্য ৯২ সালে খুলে দেয়া হয়। প্রায় ২১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই চিড়িয়াখানাটি। প্রতিদিন এখানে কয়েক হাজার দর্শনাথীর সমাগম হয়।
চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. আম্বর আলী তালুকদার জানান, গরমে প্রাণিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাণিদের দেহে পানি, স্যালাইন, ভিটামিন দেয়া হচ্ছে। সব সময়ের জন্য চিকিৎসা সেবা, অসুস্থ হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। যে সব প্রাণি একেবারে গরম সহ্য করতে পারে না, তাদের পানি দিয়ে শীতল করার ব্যবস্থা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত