রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রমেক বার্ন ইউনিটে গরমে রোগীদের হাঁসফাঁস

আটটি এসিই নষ্ট

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের দুঃসহ দিন কাটছে। আটটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) সব কটিই এক মাসের বেশি সময় ধরে নষ্ট। ফলে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছেন রোগীরা। হাতপাখার সাহায্যে পোড়া শরীর ঠাণ্ডা করার আপ্রাণ চেষ্টা তাদের স্বজনদের। একটানা তিন বছর এসিগুলো চলে এলেও মাঝে সংস্কার না করায় প্রায় একই সঙ্গে সব কটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। জানা গেছে, বার্ন ইউনিটে ১৪টি শয্যা রয়েছে। একেবারে বদ্ধ ঘরে কোনো ভেন্টিলেশন নেই। বর্তমানে প্রতিটি শয্যাতেই রোগী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো ইউনিটজুড়ে গুমোট গরম। রোগীরা যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তাদের স্বজনেরাও গরমে অস্থির। তারা হাতপাখা দিয়ে রোগীদের বাতাস করছেন। রংপুর সদর উপজেলার অগ্নিদগ্ধ নীলিমা রানী (২২) গত ৩০ মার্চ থেকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। তার মা নিয়তি রানী বলেন, ‘এক মাসের বেশি সময় হয়ে গেল এসি নষ্ট। চিকিৎসার থাকি এইভাবে থাকা আরও বেশি কষ্ট।’

জয়পুরহাটের নুর আলমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৭) দুই মাস ধরে এখানে চিকিৎসাধীন। পোড়া শরীরের যন্ত্রণা নিয়ে ফাতেমা বলেন, ‘শরীরটা পুড়ি যায়। এত যন্ত্রণা আর সহ্য হয় না।’গরম পানিতে ঝলসে গেছে রংপুর নগরীর কেরানীপাড়ার গৃহবধূ আফরোজা বেগমের (৪২) শরীর। এখনো ক্ষত সারেনি। তার স্বজন আবদুল বারী বলেন, ‘এত দিন হয়ে গেল এসি নষ্ট হয়েছে। কবে ঠিক হবে তা কেউ জানে না।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মারুফুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদগ্ধ  রোগীদের এসি কক্ষ ছাড়া চিকিৎসাসেবা দেওয়া একেবারেই ঠিক নয়। এভাবে গরমে থাকলে রোগীদের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। নষ্ট এসিগুলো ঠিক করার জন্য পরিচালকের দফতরে প্রতিদিনই তাগাদা দেওয়া হয়। কিন্তু তা আর ঠিক হয় না। হাসপাতালের পরিচালক আ স ম বরকতুল্লাহ রোগীদের চরম দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, নষ্ট এসিগুলো মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো খবর নেই। কবে নাগাদ এসিগুলো ঠিক করা হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

সর্বশেষ খবর