বৃহস্পতিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীরের ইন্তেকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীরের ইন্তেকাল

বিশিষ্ট সাংবাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক আমানুল্লাহ কবীর আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। একসময় অবিভক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি আমানুল্লাহ কবীরের মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ডায়াবেটিস ও লিভারের জটিলতায় ভুগছিলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে নামাজে জানাজা শেষে গতকাল আমানুল্লাহ কবীরের লাশ জামালপুরের গ্রামের বাড়ি নেওয়া হয়। আজ সকাল ১০টায় মেলান্দহে রেখিরপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আরেক দফা জানাজার পর তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। আমানুল্লাহ কবীর দীর্ঘ সাংবাদিকতায় বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের এই নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সাংবাদিক সমাজে। অনেকেই রাতে ছুটে যান বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তার মৃত্যুতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা গভীর শোক প্রকাশ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে ও ডিইউজের দুই অংশ শোকবার্তা পাঠানোর পাশাপাশি মরহুমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। আমানুল্লাহ কবীরের মৃত্যুতে জাতীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন শোক জানিয়েছেন। গতকাল ভোর সাড়ে ৬টায় ঢাকার কল্যাণপুরের দারুসসালাম ফুরফুরা শরীফ মসজিদে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দুই অংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মোল্লা জালাল, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা এই প্রয়াত সাংবাদিকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া ও ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, জামালপুর সমিতি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম প্রভৃতি সংগঠন থেকেও প্রয়াত সাংবাদিকের কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। প্রেস ক্লাবে নামাজে জানাজায় অংশ নেন সিনিয়র সাংবাদিক এম আমানুল্লাহ, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, গোলাম তাহাবুর, খন্দকার মনিরুল আলম, মাহফুজ উল্লাহ, জাহিদুজ্জামান ফারুক, গাজীউল হাসান খান, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, এম এ আজিজ, মনজুরুল ইসলাম বুলবুল, আবদুল জলিল ভুঁইয়া, আবদুল হাই শিকদার, আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, কামালউদ্দিন সবুজ, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ আবদাল আহমদ, সরদার ফরিদ আহমদ, শাহেদ চৌধুরী, মাঈনুল আলম, কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ। আমানুল্লাহ কবীরের বড় ছেলে শাতিল কবীর জানাজার আগে তার বাবার জন্য সবার দোয়া চান।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির, সাবেক এমপি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ জানাজায় অংশ নেন।

আমানুল্লাহ কবীর ডেইলি স্টার, দ্য টেলিগ্রাফ, দি ইনডিপেনডেন্ট, দৈনিক আমার দেশ প্রভৃতি জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। অবিভক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে দুই মেয়াদে মহাসচিব এবং পরে সভাপতি ছিলেন তিনি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

‘দ্য স্ট্রাগলিং ডেমোক্র্যাসি অব বাংলাদেশ’, ‘নদী ও অন্ধকারের রূপ’, ‘মুখোশবাড়ি’, ‘নিস্তব্ধতার মাতম’, ‘ জেলায় জেলায় ভাষা আন্দোলন ও অন্যান্য তথ্য’-এর মতো বই লিখে গেছেন আমানুল্লাহ কবীর। পাশাপাশি টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানগুলোতে তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ।

সর্বশেষ খবর