বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরিবহন সংকটে রাজধানী, দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবহন সংকটে রাজধানী, দুর্ভোগ

পরিবহন না থাকায় গতকাল হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছায় সাধারণ মানুষ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে গতকাল অচল হয়ে পড়েছিল রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকা। উত্তরা থেকে নিউমার্কেট, মিরপুর থেকে পুরান ঢাকার কোর্টকাচারি, প্রগতি সরণি থেকে শাহবাগ পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করতে পারেনি স্বাভাবিকভাবে। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেমে সব সড়কই অবরোধ করে রাখেন সকাল থেকে। এমন অবরোধে অচল ঢাকায় গাড়ির চাকা না ঘোরায় দুর্ভোগের শেষ ছিল না সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হওয়া নগরবাসীর। আবার অফিস শেষে বিকালে বাড়ি ফেরার পথেও একই ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হেঁটে চলাচল করেছেন নগরবাসী। ভুক্তভোগীরা জানান, রাজধানীর সড়কগুলোয় যানাবাহন বন্ধ থাকায় মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয়েছে তাদের। বিশেষ করে নারীদের কষ্টের শেষ ছিল না। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ভোগান্তি ও কষ্টের শিকার হয়েছেন অসুস্থ লোকজনও। রুহুল আমীন নামে একজন জানান, তিনি দুপুরে মিরপুর-১ নম্বর থেকে কুড়িলে আসার জন্য আকিক পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। কিন্তু বাসটি মিরপুর-১০ হয়ে কালশী পর্যন্ত গিয়ে আটকে যায়। তার পরই শুরু হয় ভোগান্তি। গাড়ি থেকে নেমে অনেক পথ হেঁটে কুড়িলে পৌঁছান। রাশেদ নামে একজন জানান, সকালে দিয়াবাড়ী থেকে সায়েদাবাদ যাওয়ার জন্য তিনি রাইদা পরিবহনের একটি গাড়িতে উঠেছিলেন। কিন্তু বাস বেশি দূর যেতে পারেনি। পরে তাকে হেঁটেই গন্তেব্যে পৌঁছতে হয়েছে। এজন্য তার কষ্টের সীমা ছিল না। অনেকে আবার প্রয়োজনীয় কাজ না সেরেই মাঝপথ থেকেই বাসায় ফিরে যান। কর্মজীবী নারী-পুরুষদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে অনেকেই গাড়ি না পেয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। বাধ্য হয়ে হেঁটেই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন দুপুরের দিকে। উত্তরা থেকে সকালে মালিবাগের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন মিলন নামে একজন। কিন্তু কুড়িল বিশ্বরোডে পৌঁছলে তার গাড়ি সামনে এগোতে পারেনি। তিনি জানান, জরুরি কাজ থাকায় বিশ্বরোড থেকে হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছেন। নিজের কষ্টের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘প্রচ  গরমে সিদ্ধ হওয়ার অবস্থা। তার পরও দীর্ঘ পথ হাঁটতে হয়েছে।’

মালিবাগ, শান্তিনগর, মৌচাক, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, গুলশান, বনানী, মাদানী এভিনিউ, শাহবাগ, ফার্মগেট, বাংলামোটর, মিরপুর রোড, নিউমার্কেট সব জায়গায় দেখা গেছে, প্রয়োজনীয় কাজে রাস্তায় নামা হাজার হাজার নারী-পুরুষ হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন।

তবে এ ভোগান্তির মধ্যেও সাধারণ মানুষ ছাত্রদের আন্দোলনের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। এ আন্দোলনেও যদি সড়ক নিরাপদ হয় তাহলে তাদের এই কষ্ট-ভোগান্তি কোনো কিছুই গায়ে লাগবে না।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজধানীর প্রগতি সরণির নর্দায় বাসচাপায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার নিহত হওয়ার প্রতিবাদে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ওইদিনই রাস্তায় নেমে আসেন ছাত্ররা। যার রেশ গতকালও ছিল রাজধানীজুড়ে।

সর্বশেষ খবর