বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অযাচিত এসএমএস নিয়ে গ্রাহকদের অসন্তোষ

বিটিআরসির গণশুনানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) গণশুনানিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে গ্রাহকরা। এ সময় থ্রিজি-ফোরজিতে ধীরগতি, ভয়েস কল কেটে যাওয়া (কলড্রপ) ও অযাচিত এসএমএস সার্ভিসের নামে টাকা কেটে নেওয়াসহ টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক দুর্বলতার নানা অভিযোগ তুলে তা দ্রুত সমাধানের দাবি জানানো হয়।

গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটরিয়ামে ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ বিষয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানি কমিটির সভাপতি ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক এবিএম হুমায়ুন কবির। প্রায় ৩ ঘণ্টার গণশুনানিতে ১৬৫ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২৪ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত বিটিআরসির ওয়েবসাইটে ২০২ জন নিবন্ধন করে এক হাজার ৩১৯টি মতামত তুলে ধরে এবং এদের মধ্য থেকে বাছাই করে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে মোবাইল অপারেটরদের কলড্রপ ও বিভিন্ন প্যাকেজ, বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন, সাইবার অপরাধ, মোবাইলফোনে হুমকি, ফেসবুক ব্যবহারে নিরাপত্তা, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, ফাইভ জি, অ্যামেচার রেডিও সার্ভিস, মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি, মোবাইল অপারেটরদের কলসেন্টারের মাধ্যমে সেবা সংক্রান্ত অভিযোগ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য টেলিকম সেবা প্রদানকারীদের সেবা সম্পর্কে আলোচনা হয়। এ সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা, ভোক্তা অধিকার সংঘ, মোবাইল গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন, বিটিআরসির লাইসেন্সধারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং তাদের অ্যাসোসিয়েশন     সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে প্রায় ২২টি প্রশ্ন উঠে আসে এবং সমাধানের তথ্য ১৫-২০ দিনের মধ্যে বিটিআরসির ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

 বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রায় তিন বছর আগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির অভিযোগ আজ (বুধবার) কেন প্রকাশ করা হচ্ছে? গণশুনানির ৯০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের নিয়ম থাকলেও বিটিআরসির কেন এ ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই? একইসঙ্গে গ্রাহকরা অপারেটরদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনছে তার পক্ষে অপারেটররা মতামত না দিয়ে কমিশন কেন তাদের পক্ষপাতিত্ব করছে? গণশুনানিতে রাজকুমার সাহা নামে একজন জানতে চান, ইন্টারনেটের মূল্য কমানো ও ন্যূনতম মেয়াদ ৮ দিন করা যায় কিনা? এ বিষয়ে বিটিআরসির মহাপরিচালক এবিএম হুমায়ুন কবির বলেন, ইন্টারনেটের মূল্য কমানো নিয়ে পর্যবেক্ষণে আছে। পর্যবেক্ষণ শেষে মূল্য ও সীমা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আবদুস সালাম নামে একজন গ্রাহক অযাচিত নম্বর থেকে কল আসা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলে হুমায়ুন কবির বলেন, ডিএনডি (ডু নট ডিস্ট্রাব) অপশন কাজ করছে, এ ছাড়া অপারেটররাও ব্যবস্থা নেবে। ডি-অ্যাক্টিভেটেড নম্বর দিয়ে ইমো, ভাইবারের মতো অ্যাপস ব্যবহার বন্ধের দাবি করেন জাহিদুল ইসলাম এবং ইমরান আহমেদ নামে দুজন গ্রাহক। তবে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আইটিইউ কাজ করছে এবং দ্রুত সমাধান হবে বলে জানান হুমায়ুন কবির। যত্রতত্র টাওয়ার বসানো নিয়ে টাওয়ার শেয়ারিং বিষয়ে এক গ্রাহকের প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির অপর মহাপরিচালক মাহফুজুল করিম মজুমদার বলেন, টাওয়ারের চেয়ে মোবাইলফোনের রেডিয়েশনের ঝুঁকিটা বেশি। টাওয়ার শেয়ারিং নিয়ে অপারেটর ও টাওয়ারকো কাজ চলছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, অভিযোগগুলো নিশ্চয়ই কমিশন সমাধান করবে। কল সেন্টার এখন সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। ফেসবুকসহ ওয়েবসাইটে অভিযোগ নেওয়া হবে। ছয় মাসের মধ্যে ফাইভ-জির জরিপ কাজ শেষ করা হবে। ভয়েস কলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে গ্রাহকরা কমিশনের কাছে জানতে চাইলে কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বের দুই-একটি দেশ ছাড়া বাংলাদেশের কলরেট সব চেয়ে কম।

সর্বশেষ খবর