সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যক্তিগত কারণেই বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা

শিগগিরই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধান করতেই বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন পলাশ আহমেদ ওরফে মাহাদি ওরফে মাহিবি জাহান। সাবেক স্ত্রী শামসুন্নাহার শিমলার সঙ্গে বিরোধ মীমাংসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করতেই পলাশ বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এ ছিনতাই প্রচেষ্টায় নিহত পলাশ ছাড়া আর কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। একমাত্র আসামি পলাশ নিহত হওয়ায় পুলিশ এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এ মামলার তদন্ত প্রায় শেষ। তদন্তে নিহত পলাশ ছাড়া আর কারোই সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাই এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে। কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ‘এ মামলায় ৪০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তে পলাশ ছাড়া

আর কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার জন্য ১৪৮ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি-১৪৭। এ ফ্লাইটের ১৭-ডি নম্বর আসনটি বরাদ্দ ছিল পলাশ আহমদের। উড্ডয়নের ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর কেবিন ক্রু হোসনে আরার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ককপিটের দরজা খুলতে বলেন পলাশ। পাইলট সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুমকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। তখন কৌশলের অংশ হিসেবে পলাশের সঙ্গে কথা বলেন পাইলট ও ফার্স্ট অফিসার। আলাপকালে পলাশ ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

 প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করা না হলে বিমানে ক্ষতি করার হুমকি দেন তিনি। তখন পাইলট ও ফার্স্ট অফিসার নানা আশ্বাস দিয়ে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। নির্ধারিত সময়ের ৭ মিনিট আগেই বিমানটি জরুরি অবতরণ করা হয়। ফের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেবিন ক্রু সাগরকে পলাশের জিম্মায় রেখে যাত্রীদের নামিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর নেমে যান পাইলট ও কেবিন ক্রু। পরে প্যারাকমান্ডো অভিযান চালায় বিমানে। এতে নিহত হন বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ।

প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন পলাশ আহমেদ। বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টার পর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ ঘটনায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে পলাশ আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

সর্বশেষ খবর