শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বালুঘাট দেখিয়ে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন আওয়ামী লীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে বালুঘাটের শেয়ার বিক্রির নামে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু। শেয়ারের জন্য যারা টাকা দিয়েছিলেন, তারা এখন এই নেতার পিছু পিছু ঘুরছেন।

নগর আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক নাইমুল হুদা রানা জানান, বালুঘাটের শেয়ারের জন্য নেওয়া টাকা ফেরত না দেওয়ায় এখন কিছুটা জটিলতা হয়েছে। নগর সভাপতি ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছেও প্রতিকার চেয়ে নালিশ গেছে। তিনি (লিটন) বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আলীমুল হাসান সজল জানান, ঘাটের ১০০টি শেয়ারের বিপরীতে দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী বেন্টুকে আড়াই কোটি টাকা দেন। ঘাট থেকে যে লাভ হবে, সেখান থেকে বিনিয়োগ অনুযায়ী ভাগ পাওয়ার কথা। কিন্তু বেন্টু কোনো টাকা না দিয়ে এখন তাদের ঘোরাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর অদূরে শ্যামপুর এলাকায় চলতি বছরের জন্য একটি বালু মহাল ইজারা নেন বেন্টু। কিন্তু সেখানে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি গত বছর মার্চে তিনি ৫ কিলোমিটার দূরে জোর করে নগরীর তালাইমারী এলাকায় আরেকটি বালুঘাট গড়ে তোলেন। এতে করে হুমকিরমুখে পড়ে শহররক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এরপর পরিবেশবাদীদের আন্দোলন ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ২৪ জুলাই ওই ঘাটটি বন্ধ করে দেয় রাজশাহী জেলা প্রশাসন। কিন্তু তারপরেও ক্ষমতার জোরে সেই ঘাটটি চালু রাখেন বেন্টু। পরবর্তীতে নদীর গতিপথ বন্ধ করে তৈরি করেন রাস্তা।

এদিকে এই ঘাটটি দিয়ে বালু কারবারের জন্য আড়াই কোটি টাকা দাম ধরে ১০০টি শেয়ার বিক্রি করেন আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টু। প্রতিটি শেয়ারের দাম ধরা হয় আড়াই লাখ টাকা করে।

 এই ১০০টি শেয়ার ১১৭ জন মিলে কেনেন। শেয়ার গ্রহণকারীদের অভিযোগ, শুরুতে শেয়ার বিক্রির অংশ হিসেবে তাদের অল্প পরিমাণে টাকা দেওয়া হতো। কিন্তু গত চার মাস আর কোনো টাকা দেননি বেন্টু। এমনকি শেয়ার বিক্রির টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি তাদের। অনেকেই ধার-দেনা করে বালুঘাটের শেয়ার কিনে এখন টাকা না পেয়ে পড়েছেন বিপাকে। তারা টাকা ফেরতের জন্য বেন্টুকে বার বার চাপ দিলেও তিনি আর এনিয়ে কোনো কথা বলতে চান না। এমনকি ওই এলাকায়ও যাচ্ছেন না বেন্টু।

টাকা না পেয়ে কয়েকদিন আগে শেয়ার গ্রহণকারীরা বৈঠক করে স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) আবদুস সাত্তারকে টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দেন। আবদুস সাত্তারও একজন শেয়ার গ্রহণকারী। তিনি জানান, এনিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিগগিরই ব্যবস্থা না হলে, তারা ঘাটটি বন্ধ করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর