চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণখ্যাত কর্ণফুলী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ছিলেন দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ছিল প্রয়োজনীয় উচ্ছেদ উপকরণ। ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু করা অভিযানে ২৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও প্রায় ১০ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বছর পার হলেও দ্বিতীয় দফায় আর উচ্ছেদ অভিযান শুরুই হয়নি। উচ্ছেদকৃত স্থান ফের বেদখল হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ চলমান আছে। কিন্তু কিছু আইনি জটিলতার কারণে উচ্ছেদের কাজটা শুরু করা যাচ্ছে না। তাছাড়া উচ্ছেদকৃত স্থান যাতে আবারও কেউ বেদখল করতে না পারে এজন্য সেখানে লাল কালি দিয়ে মার্কিং ও দাগ দেওয়া আছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আবারও উচ্ছেদ পরিচালনা করা হবে।’ সরেজমিন দেখা যায়, উচ্ছেদকৃত স্থানগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে ট্রাক-লরি এবং পণ্য লোড-আনলোডের ঘাট হিসেবে। তাছাড়া এসব এলাকায় তৈরি হয়েছে ছোট ছোট টং দোকান। উচ্ছেদকৃত স্থানে রাখা হয়েছে লবণ, মসুর ডালের বস্তাসহ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পণ্য। আনু মাঝির ঘাট, মাঝির ঘাট, আদম ঘাট, লবণ ঘাট, বিবি মসজিদ লেন, বারিক বিল্ডিং মোড়ের ঘাট, সদরঘাট লাইটারেজ জেটি ঘাট, কর্ণফুলী ঘাটসহ উচ্ছেদকৃত স্থানসমূহে অভিন্ন অবস্থা। উচ্ছেদের সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে দেওয়া লাল রঙের নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ডটি কয়েক স্থানে দেখা যায়নি। অন্যদিকে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় নেওয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। নদীদূষণ, দখলরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিতে এক বছর মেয়াদের ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’, তিন বছরের ‘স্বল্পমেয়াদি’, পাঁচ বছরের ‘মধ্যমেয়াদি’ এবং ১০ বছরের ‘দীর্ঘমেয়াদি’ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। নির্ধারণ করা হয়েছে মহাপরিকল্পনার দায়িত্ব ও কার্যাবলি। কিন্তু উচ্ছেদ কার্যক্রম শেষ না হলে নদী রক্ষায় প্রণীত মহাপরিকল্পনা হিমাগারে যাওয়ার শঙ্কাও আছে।