শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা সতর্কতায় পর্যবেক্ষণে নতুন বন্দীরা!

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

করোনা সতর্কতায় পর্যবেক্ষণে নতুন বন্দীরা!

করোনাভাইরাস সতর্র্কতায় রয়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার। প্রতিদিন নতুন যেসব বন্দী কারাগারে আসছে, তাদের জন্য সাবান, হ্যান্ডওয়াশ ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চার দিনে মহিলাসহ প্রায় ৩২০ জনের মতো বন্দী কারাগারে এসেছে। এসব বন্দীর নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারাগারের ভিতরে নেওয়া হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষায় কারাগারেই বসানো হয়েছে ‘থার্মাল স্ক্যানার’। আদালত থেকে আনা আসামিদের থার্মাল স্ক্যানারে চেক করে ঢোকানো হচ্ছে। এখানে একজন চীনা নাগরিক ও মহিলা রোহিঙ্গাসহ ৮৬ জন বন্দী রয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই কারাগারে মোট বন্দী আছে ৭ হাজার ৫৮০ জন। এখানে ধারণক্ষমতার চেয়েও বন্দী বেশি রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ০চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় কারাগার প্রস্তুত রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী, বেশ কিছু উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। পুরুষ-মহিলাদের জন্য আলাদা কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া কারা হাসপাতালে আইসোলেশনের জন্য ওয়ার্ডও প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা ছাড়াও আসামিদের মধ্যে কেউ গত ১৪ দিনের ভিতর বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন কি না, আসামির স্বজনদের মধ্যে কেউ বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন কি না এসব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। কারাগারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, নতুন বন্দী কারাগারে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে তাদের কেউ বিদেশ ফেরত কিনা অথবা বিদেশ থেকে আসা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কেউ ছিল কিনা, করোনার প্রাথমিক কোনো লক্ষণ তাদের মাঝে আছে কি না  বিশেষ করে সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে কোনো বন্দী এসেছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে। এসব দেখাশোনা করতে চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চেষ্টা চলছে বন্দীদের মধ্যে করোনাভাইরাস বহনকারী কোনো রোগী প্রবেশ করতে না পারে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস থেকে কারাবন্দীদের সুরক্ষার জন্য গত ১০ মার্চ কারা অধিদফতর থেকে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক জেলার দায়িত্বশীলরা কাজ করছেন। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ দেখা দিলে কারাগারে নতুন বন্দীদের ১৪ দিনের জন্য পৃথক ওয়ার্ডে রাখা হবে। কারা অভ্যন্তরে নতুন করে আটটি ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ওয়ার্ডে পুরুষ ও চারটি ওয়ার্ডে মহিলাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণে রাখার পর কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে তার পরীক্ষার জন্য জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে। এ ছাড়া কারা ফটকে প্রবেশের পর বন্দীদের হাত ধোয়া ও পরিষ্কারের জন্য পানি ও সাবানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে কারাগারের ভিতরে প্রতিটি ওয়ার্ডে সাবান, হ্যান্ডওয়াশ ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বন্দীদের মধ্যে যাতে আতঙ্ক না ছড়ায়, সেজন্য চিকিৎসক ও কারা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বন্দীদের মোটিভেশন করা হচ্ছে। রয়েছে চিকিৎসক টিমও।

সর্বশেষ খবর