শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে প্রস্তুতির সঙ্গে শঙ্কা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে প্রস্তুতির সঙ্গে শঙ্কা

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং সিটি করপোরেশন নানা প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে। তবুও বিশ্বব্যাপী ও দেশে সংক্রমণ, স্বাভাবিক রোগের চিকিৎসা না পাওয়া, সাধারণ মানুষের অবাধ যাতায়াত বন্ধ না হওয়াসহ নানা কারণে শঙ্কা কাটছে না জনমনে। ফলে বৈশ্বিক বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের মনে শঙ্কা ক্রমশ দানা বাঁধছে। জানা যায়, চট্টগ্রামে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় দেশের অন্যতম রোগ গবেষণা কেন্দ্র ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ইনফেকশাশ ডিজিজে (বিআইটিআইডি) ১০০টি এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১০০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনোটিতেই নেই করোনাভাইরাস আক্রান্তের জরুরি চিকিৎসা আইসিইউ ব্যবস্থা। গত ৩০ মার্চ জেনারেল হাসপাতালে পাঁচ শয্যার একটি ইউনিট চালুর কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ। পক্ষান্তরে, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে একমাত্র বিআইটিআইডিতে। কিন্তু এখানকার হটলাইনে দৈনিক অন্তত এক হাজার ফোন কল আসছে। হটলাইন ব্যস্ত থাকাসহ নানা কারণে অনেকেই প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে। আবার অনেকে টেস্ট করাতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে করোনার এই সংকটময় মুহুর্তে সর্দি-কাশি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট-হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্র বন্ধসহ এ জাতীয় রোগীরা চরম শঙ্কায় পড়ছেন। তারা স্বাভাবিক চিকিৎসা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে। গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের শ্বাসকষ্টের এক রোগী একাধিক হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি হতে না পেরে অবশেষে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বলেও অভিযোগ ওঠে। তাছাড়া রাউজানে এক কলেজ শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্ট নিয়ে পাঁচটি হাসপাতালে গিয়েও কোথাও ঠাঁই পায়নি। বর্তমানে তিনি স্বাভাবিক চিকিৎসায় আছেন। আবার করোনা প্রকোপ শুরুর দিকে চিকিৎসক-নার্সদের পার্সোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) সংকটের কথা জোরেশোরে উঠছিল। ফলে অনেক চিকিৎসক পিপিই সংকটে চিকিৎসা দিতেও অপারগতা প্রকাশ করছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। তবুও অনেক সেবা কেন্দ্রে রোগীরা সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে। সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা সবাই কমবেশি শঙ্কায় আছি। কিন্তু আমরা এর চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। কোথাও কোনো ঘাটতি নেই। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আগে আমাদেরকেই সচেতন এবং সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে অবশ্যই সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।’ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষদের স্বাভাবিক চিকিৎসায় চমেক হাসপাতালকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাই এখানে করোনা-সংক্রান্ত কোনো রোগের চিকিৎসা করানো হচ্ছে না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর