গতকাল সকাল ১০টার মধ্যে ভারী বুলডোজার নিয়ে খুলনার ময়লাপোতা মোড়ে হাজির হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। খুলনা শহর যানজটমুক্ত করে গড়ে তুলতে শেরেবাংলা সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে ২২৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। কিন্তু শুরুতে বিপত্তি বাধে ময়লাপোতা মোড়ের শাহজাহান ফার্মার পাঁচতলা ভবনের বরাদ্দ নিয়ে। ভবনের মালিক আসিফ ইকবাল লিটন জানান, কেডিএ’র কাছ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে প্লট হিসেবে বরাদ্দ নিয়ে নকশা মেনেই তিনি ভবন তৈরি করেছেন। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ময়লাপোতা মোড়ের ৭৫ ফুট চওড়া অধিগ্রহণকৃত সড়কের জমির ১৫ ফুট ওই ভবনের অবৈধ দখলে। এ নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরাদ্দ কাগজপত্র নিয়ে কেডিএকে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। পরে ওই ভবন রেখেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
জানা যায়, গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্ত শেরেবাংলা রোডের জমিতে থাকা হোমিওপ্যাথিক কলেজের একাংশ, কেসিসি সান্ধ্য বাজারের একাংশ, সোনাপোতা স্কুল ও শিশু মনোজাগতিক স্কুলের বাউন্ডারি ওয়াল, হোটেল গ্রান্ড প্লাসিডের প্রধান ফটক, ঘোষ ডেয়ারি, মুদি দোকান, মোটরসাইকেল গ্যারেজ, মোবাইল রিচার্জের দোকানসহ অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাস জানান, আগামী ২৪-২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তিনি বলেন, ১৯৫০-৫১ সালে এখানে সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু ময়লাপোতা মোড়ে ওই জমির একাংশ প্লট হিসেবে কেডিএ বরাদ্দ দিয়েছে। সেখানে এর মধ্যে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ হয়েছে। কেডিএকে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সময় দেওয়া হয়েছে। তারা দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযান শুরুর আগেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে। এদিকে কেডিএ এর সিনিয়র বৈষয়িক অফিসার শামীম জেহাদ বলেন, ‘বরাদ্দকৃত ওই জমির মালিককে নিয়ে আমরা কথা বলেছি। কীভাবে এর সমাধান করা যায় আলোচনা হচ্ছে।’
জানা যায়, চার লেনের প্রশস্তকরণ কাজে সবচেয়ে বড় সমস্যা রয়েছে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে। এখানে সড়কের বামপাশে কয়েকটি স্থাপনার অভ্যন্তরে প্রায় ১৫ ফুট পর্যন্ত সড়কের জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া সড়কের মাঝে ওজোপাডিকোর বিদ্যুতের খুঁটি, বিটিসিএল ও বেসরকারি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির লাইন রয়েছে। সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, অবৈধ দখলবাজির সঙ্গে আপস করা হবে না। পরিকল্পিতভাবে সড়ক প্রশস্ত হলে আগামী ১০০ বছর যারা এই শহরে বসবাস করবেন তারা এর সুফল ভোগ করতে পারবেন।