সাত দিন পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মৌমিতার মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল কাটছে না। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে বাসার ছাদ থেকে পড়ে তার মৃত্যুর পর এ নিয়ে সৃষ্টি হয় রহস্য। পরিবারের দাবি- তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর পুলিশ বলছে- ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই সব বেরিয়ে আসবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ওপর থেকে পড়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ থেকে ব্লাড, ভিসেরা ও হাইভেজাইনাল সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পরীক্ষার জন্য হিস্ট্রোপ্যাথলজিতে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে বলা যাবে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল কিনা। তার শরীরে যে আঘাতগুলো রয়েছে তা ভবন থেকে পড়ার কারণে হয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। মৌমিতার বাবা কামাল মোস্তফা শামীম জানান, কলাবাগানের ওই বাড়ির মালিকের ছেলে ফাইজার তাকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করত। ফাইজারের বন্ধু আদনানও তাকে উত্ত্যক্ত করত। বাড়িওয়ালার একটিই ছেলে। সে বাইরে থেকে ছেলেদের বাসায় নিয়ে আসত। গত সপ্তাহে মৌমিতার মা ফাইজারের মাকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তবে তিনি উল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমার ছেলে যা মন চায় তাই করবে। আপনার মেয়েকে বের হতে না দিলেই তো হয়। আমার ছেলেকে থ্রেট দিতে আসছেন?’ পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি জানান, আমরা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। প্রতিবেদন হাতে পেলেই মামলার অনেক কিছু বের হয়ে আসবে।
পারিবারিক সূত্র অনুযায়ী তিন বোনের মধ্যে মেজ মৌমিতা ছিলেন চাপা স্বভাবের। তবে সব সময় হাসিখুশি থাকতেন। ভিকারুন নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলাবাগান শাখা থেকে মাধ্যমিক পাস করার পর শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে এশিয়ান প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির মালয়েশিয়া শাখায় পড়ালেখা করছিলেন। তিনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছর করোনার কারণে দেশে আসেন। এরপর থেকে অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস করছিলেন তিনি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে ৮ নম্বর রোডের ২ নম্বর সাত তলার বাসার ছাদ থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়। কলাবাগান থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আদনান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।