মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

হাত মুখ ধোয়ার পর উধাও হয়ে যায় রুবেল

চট্টগ্রাম কারাগার থেকে বন্দী পলায়ন

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ভোরে ঘুম থেকে উঠে অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই কারাগার ভবনের সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে নিচে নামেন পলাতক বন্দী ফরহাদ হোসেন রুবেল। এরপর ফোয়ারা থেকে পানি নিয়ে হাত মুখ ধৌত করেন। এরপর হেঁটে বহুতল ভবনের সামনে গিয়ে রুবেল হয়ে যান উধাও। রুবেলের পালানোর কয়েক মুহূর্তের ফুটেজে ধরা পড়ে এ দৃশ্য। ওই ফুটেজের সূত্র ধরেই চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বন্দী রুবেলের পালানোর রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ও তদন্ত টিম।

কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও খুলনা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক ছগির মিয়া বলেন, ‘বেশ কিছু বিষয় সামনে রেখে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বন্দী ‘নিখোঁজে’র রহস্য উন্মোচন করে প্রতিবেদন দিতে পারব।’ সিএমপির কোতোয়ালি থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘পলাতক রুবেলের খোঁজে এরই মধ্যে কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু তার হদিস পাওয়া যায়নি।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম কারাগারের সুরক্ষিত সেল হিসেবে পরিচিত কর্ণফুলী সেল থেকে কীভাবে দুর্ধর্ষ অপরাধী পালিয়েছে তা বের করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ, কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। এরই মধ্যে কিছু ফুটেজ হাতে এসেছে তাদের হাতে। যাতে শনিবার ভোর ৫টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে পলাতক আসামি ফরহাদ হোসেন রুবেলকে। এ সময় কারাগার ভবনের সিঁড়ি দিয়ে ওপর থেকে নামতেও দেখা গেছে তাকে।

 এরপর ফোয়ারা থেকে পানি নিয়ে সে হাত মুখ ধৌত করে। হাত মুখ ধোয়ার পর হেঁটে বিল্ডিংয়ের গেট পর্যন্ত হেঁটে যায়। এরপর আর কোনো ফুটেজে তাকে দেখা যায়নি। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সুরক্ষিত সেল থেকে একক প্রচেষ্টায় রুবেলের পালানো সম্ভব নয়। তাই ধারণা করা হচ্ছে বরখাস্ত হওয়া দুই কারারক্ষী ছাড়াও আরও অনেকের সহায়তা নেওয়া হতে পারে। শুধু ভিতরের নয় বাইরের লোকজনেরও সহায়তা রয়েছে ঘটনার পেছনে। ঘটনার কয়েক দিন আগে রুবেলের সঙ্গে কার সাক্ষাৎ হয়েছে এবং কারাগার থেকে কার কার সঙ্গে মোবাইলে রুবেল কথা বলেছে তাঁর খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।    

তল্লাশি চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস : নিখোঁজ হাজতির খোঁজে কারাগারের অভ্যন্তরীণ তল্লাশি শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল। গতকাল ফায়ার সার্ভিসের দল কারাগারে প্রবেশ করে ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকে তল্লাশি করে। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক জানে আলম বলেন, ‘নিখোঁজ বন্দীর খোঁজে কারাগারে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল। দলগুলো কারাগারের ভিতরের সব ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকগুলো তল্লাশি করবে।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফরহাদ হোসেন রুবেল নামে এক বন্দী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জেলার ও এক ডেপুটি জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর