শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

৮০০ বছর আগের বখতিয়ার মসজিদ আগাছায় ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

৮০০ বছর আগের বখতিয়ার মসজিদ আগাছায় ঢাকা

রংপুরের মাহিগঞ্জ তিন গম্বুজ মসজিদটি আগাছায় ঢাকা পড়ে আছে। মেহরাবে চিড় ধরেছে অনেক আগেই। খসে পড়েছে দেয়ালের ইট-পলেস্তারা। এই মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে বখতিয়ার মসজিদ নামে পরিচিত। দ্রুত এই ঐতিহাসিক নিদর্শনকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনে নিয়ে দেখভাল না করা হলে হারিয়ে যাবে ৮০০ বছর আগের বখতিয়ার খলজির আমলে নির্মিত এই স্মৃতিচিহ্ন। ওই মসজিদ প্রসঙ্গে রংপুর পৌরসভার সাবেক  চেয়ারম্যান কাজী জুননুন বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ওখানে একটি স্মৃতিফলক লাগিয়েছিলাম। ১২০০ শতকে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খিলজি চীন অভিযানে যাওয়ার সময় রংপুরে আস্তানা গেড়েছিলেন। তখন ওই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তিনি আরও বলেন, আমার আমলে মসজিদটি সংস্কার ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় কিছু লোকের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ইতিহাস লেখক জোবায়ের আলী জুয়েল বলেন, বখতিয়ার খলজি ১২০৫ সালে যুদ্ধছাড়াই তৎকালীন বাংলার রাজধানী গৌড় জয়ের পর সেখানে রাজধানী স্থাপন করেন।

ক্রমে রাজ্য স¤প্রসারণ করেন উত্তর-পূর্বে রংপুর শহরের মাহিগঞ্জে এবং পূর্বে তিস্তা ও করতোয়া তীর পর্যন্ত। রংপুরে মাহিগঞ্জে তিনি একটি ছাউনি শহরও প্রতিষ্ঠা করেন। ১২০৪ সালে বঙ্গ বিজয়ের দুই বছর পর বখতিয়ার খলজি তিব্বত অভিযানকালে ঘোড়াঘাট থেকে কামরূপ যাওয়ার জন্য যাত্রাপথে রংপুরের ঘাঘট নদীর পশ্চিম পাড়ে যাত্রা বিরতি করেন। সে সময় এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। রংপুর সদরে বখতিয়ারপুর নামে একটি গ্রামও রয়েছে।

মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ৩২ ফুট লম্বা, প্রস্থে ১৩ ফুট। মাটি থেকে কার্নিশের উচ্চতা দশ ফুট। পুবদিকের দেয়ালে রয়েছে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার খিলান বিশিষ্ট প্রবেশপথ। উত্তর ও দক্ষিণের দেয়ালের প্রবেশপথগুলোও প্রায় একই রকম। উত্তরের প্রবেশপথটি ছাড়া অন্য পথগুলো ইটের গাঁথুনি দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। রংপুর তাজহাট জমিদারবাড়ির কাস্টোডিয়ান এসএম হাসনাত বিন ইসলাম বলেন, খুব শিগগিরই তিনি মসজিদটি পরিদর্শন করবেন এবং এটি যাতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতায় আসে সেই চেষ্টা করবেন।

সর্বশেষ খবর