বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির তদন্ত রিপোর্ট

কার্গোর বেপরোয়া গতি ও সেতুর ভুল নকশাকে দায়ী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবিতে ৩৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে কার্গো জাহাজের বেপরোয়া গতি ও নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতল্যা সেতুর ত্রুটিপূর্ণ নকশাকে দায়ী করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্গো চালকের বেপরোয়া গতি, অদতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে নদীর মাঝখানে নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতল্যা সেতুর পিলার ¯'াপন এবং নৌপথে প্রতিবন্ধকতামূলক নির্মাণসামগ্রী রেখে নৌপথ সরু করে ফেলাকে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় সদর উপজেলার সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজ ধাক্কা দিয়ে অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহী ‘এমভি সাবিত আল হাসান’ নামে লঞ্চটিকে ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন রাতে লঞ্চ ডুবে ৩৪ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা করা হয়। এ ছাড়া ঘটনার রাতে জেলা প্রশাসনের সাত সদস্যের এবং বিআইডব্লিউটিএর পাঁচ সদস্যের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৫ এপ্রিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় সাত সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি। ৮ এপ্রিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গণশুনানিতে ২৬ জন সাক্ষ্য দেন।

এর মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি ১২ এপ্রিল নৌ সচিব মেজবাহ্ উদ্দীন চৌধুরীর কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে ২৩টি সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট"াফিক ব্যব¯'াপনা বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, নির্ধারিত সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে ২৩টি সুপারিশ করা হয়েছে।

২৭ প"ষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজটির বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। চালকের বেপরোয়া গতি, অদতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে সেতুর পিলার সরিয়ে নদীর প্রশস্ততা বাড়ানো, ছোট আকারের সাংকেন ডেকবিশিষ্ট লঞ্চ ক্রমান্বয়ে সরিয়ে নেওয়া, যেখানে-সেখানে অলস জাহাজ নোঙর ও লোড-আনলোড বন্ধ করা, চালকদের দ ও সচেতন করতে প্রশিণের ব্যব¯'া করা, সার্ভেয়ারের সংখ্যা বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজটি প্রথম শ্রেণির মাস্টার ওয়াহিদুজ্জামান এবং ডুবে যাওয়া ‘এমভি সাবিত আল হাসান’ লঞ্চটি তৃতীয় শ্রেণির চালক জাকির হোসেন চালা"িছলেন। কার্গো জাহাজটির নিবন্ধন থাকলেও সার্ভে অনুমোদন ছিল না। তদন্ত প্রতিবেদনে এসকেএল-৩ নামক পণ্যবাহী জাহাজের মাস্টার ও চালকের জবানবন্দি, ডুবে যাওয়া লঞ্চ সাবিত আল হাসানের মাস্টার, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপরে (বিআইডব্লিউটিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য সংযুক্ত করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর