সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

সমুদ্রের জমি পুনরুদ্ধার করে রানওয়ে সম্প্রসারণ হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরের দ্বিতীয় দফা রানওয়ের সম্প্রসারণ কাজ উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বিশ্বের অন্যতম বিমানবন্দর নির্মাতা কোম্পানি এরই মধ্যে গ্রাউন্ড ব্রেকিং কাজের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চলতি লকডাউনের পরপরই বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের আনুষ্ঠাানিক উদ্বোধন করবে। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেছেন, লকডাউন না থাকলে এতদিনে একটা সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ ঠিক করা যেত। এ প্রকল্পের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলেই উদ্বোধনের তারিখ ঠিক হবে। সেই প্রতীক্ষায় আছি আমরা।  পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের কোলে অপূর্ব নৈসর্গিক পরিবেশে গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এরই মধ্যে শেষের পথে প্রথম দফার কাজ। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প বিমানবন্দরের রানওয়েকে আরও শক্তিশালী করতে বাড়ানো হচ্ছে বর্তমান ৯ হাজার ফুট থেকে পৌনে ১১ হাজার ফুটে। মূলত এই রানওয়ের কাজ সম্প্রসারণের পরই এখানে ওঠানামা করতে পারবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুপরিসর এয়ারবাস ৩৮০-এর মতো উড়োজাহাজ। আগামী ৫০ বছরের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে এই রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প।  বেবিচক জানিয়েছে, বর্তমানে এ বিমানবন্দরে দৈনিক যাত্রীবাহী ও কার্গোবিমান চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের পর্যটনশিল্পের বিকাশ এবং উপকূলীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে আকাশপথে দ্রুত যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানবন্দর। বর্তমান সরকারের গৃহীত নানামুখী প্রকল্পের ফলে কক্সবাজার বিমানবন্দর একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দরে রূপ পেতে চলেছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পটি গত ৬ জানুয়ারি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদন পায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় বিশ্বের নামকরা বেশকটি প্রতিষ্ঠান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বেবিচক সদর দফতরে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চাংজিয়াং ইচাং ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউসিবি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন-জেভি’র মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বেবিচক অনুমিত ব্যয়ের চেয়ে অন্তত ২১ শতাংশ কম দর প্রস্তাব করে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হয়। বেবিচক জানিয়েছে- দরপত্রে টিকে যাওয়া চীনের এই শীর্ষ কোম্পানিদ্বয়ের রয়েছে বেইজিং বিমানবন্দর নির্মাণের মতো অত্যাধুনিক কাজের অভিজ্ঞতা, যার ছোঁয়া থাকবে কক্সবাজারেও। জানা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরের মহেশখালী চ্যানেলের দিকে রিক্লেমেশন প্রক্রিয়ায় (সমুদ্রের জমি পুনরুদ্ধার) আরও ১ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে সম্প্রসারিত হবে। রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সুপরিসর বিমান তথা বি-৭৭৭-৩০০ ইআর, বি-৭৪৭-৪০০ পরিচালনায় সুবিধা হবে। ফলে এ বিমানবন্দর থেকে সাধারণ যাত্রীর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ট্যুরিস্টের যাতায়াত বাড়বে। কক্সবাজারকেন্দ্রিক পর্যটন খাতে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়বে।  এ সম্পর্কে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, লকডাউন না থাকলে এতদিনে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প কাজের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়ে যেত। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া স¤পন্ন করে সুনির্দিষ্ট তারিখ চেয়ে একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যখনই দিনক্ষণ ঠিক করবেন-তখনই ভার্চুয়াল পদ্বতিতে শুভ উদ্বোধন করা হবে।

সর্বশেষ খবর