বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

সেই চেহারায় ফিরেছে চট্টগ্রাম

যানজট, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, স্বাস্থ্যবিধি না মানা, ভোগান্তির শেষ নেই

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

সেই পুরনো চেহারা ফিরে পেল চট্টগ্রাম নগর ও জেলার উপজেলাগুলো। টানা লকডাউনে সারা দেশে পণ্যবাহী ট্রেন ও গাড়ি চলাচল ছাড়া যাত্রীবাহী ট্রেনসহ যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। সরকারের নির্দেশনা পেয়ে গতকাল থেকে লকডাউন তুললে স্বাভাবিকভাবে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের কারণে যেমনি সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস পেলেছেন, ঠিক তেমনি যানজট আর ভোগান্তিরও শেষ নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, লকডাউন তুলে দেওয়ার পর কেউ যাবেন অফিসে, কেউ যাবেন গার্মেন্টে। কেউবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। কারও হাতে সময় নেই। সবাই ব্যস্ত জীবনের চাকা চালাতে। লকডাউন শেষে বন্দীজীবন থেকে মুক্তি পেয়ে অভাব-অনটন পুষিয়ে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টায়। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা ভুলে গেছেন অনেকেই। গতকাল ভোর থেকেই গণপরিবহনগুলোও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরসহ জেলা উপজেলাগুলোতে। বদলায়নি দ্বিগুণ ভাড়ার চিত্রও। নগরের আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, লালখানবাজার, জিইসি, নিউমার্কেটসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ ১৯ দিনের কড়া লকডাউন শেষে প্রাণসঞ্চার হয়েছে নগরের সব প্রান্তে। ব্যবসায়ীরা শাটার খুলে দোকানে বসেছেন। মেতে উঠেছেন খোশ গল্পে, চলছে লোকসানের হিসাবনিকাশও। নিউমার্কেট এলাকা। তামাকুমন্ডি ও টেরিবাজারে হয়েছে ক্রেতা সমাগম। জেলার রাউজান, রাঙ্গুনীয়া ও হাটহাজারীসহ বিভিন্ন উপজেলায় দোকান খুলেছেন। গণপরিবহনে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। এসব গণপরিবহনের পেছনেই ছুটেছেন অফিসগামী ও গার্মেন্টমুখী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা। অনেক যাত্রীও ছিলেন অসচেতন। সেই সঙ্গে অধিকাংশ গণপরিবহনে চোখে পড়েনি স্যানিটাইজারের ব্যবস্থার পাশাপাশি নেই মাস্কও। অন্যদিকে লকডাউনে ক্রেতা না থাকায় পণ্য পচে লোকসানে দিন কাটিয়েছেন পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। সেখানেও আজ ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মহানগর ও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা সকাল থেকেই মাল নিয়ে যেতে ভিড় জমিয়েছেন এখানে। লোকসান কাটিয়ে ভালো ব্যবসা করবেন বলে আশা খাতুনগঞ্জের প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী ও ১৫ হাজার কর্মচারীর। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, এবারের লকডাউনে আমাদের তো লোকসানেই গেল। লকডাউনে ক্রেতা না থাকায় বেচাবিক্রি বন্ধ ছিল। আজ থেকে লকডাউন শিথিল হলো। ক্রেতার আনাগোনাও বেড়েছে, বেচাবিক্রিও হচ্ছে।

একই কথা বললেন খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিসও।

হাফেজ আহম্মদ নামের এক যাত্রী বলেন, দেওয়ানহাট থেকে জিইসি স্বাভাবিক সময়ে ৬ টাকা নিত। লকডাউনের পর থেকে ১০ টাকা করে নিচ্ছে। অথচ লকডাউন শিথিল করার পরও ১৫ টাকা নিয়ে নিল। আজম নামের এক যাত্রী বলেন, গণপরিবহনে নতুন করে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে। সরকারি নির্দেশনার পরও সড়কে নেমেই নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে বেশি দাবি করছে। এটি মনিটরিং করা জরুরি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মূছা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। চালক-হেল্পারদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও সার্বক্ষণিক মাস্ক পরার নির্দেশনা দিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর