শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
করোনাভাইরাস

চট্টগ্রামে উপসর্গ ছাড়াই সংক্রমণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে উপসর্গ ছাড়াই সংক্রমণ

চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দার হাট এলাকার বাসিন্দা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ। গত পাঁচ দিন আগেই তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। এর আগে তার শরীরে কোনো ধরনের উপসর্গ ছিল না। কিন্তু আক্রান্ত শনাক্তের পর পরীক্ষা করে দেখা যায় তার রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেছে। সঙ্গে নেমে গেছে অক্সিজেনের মাত্রাও। পরে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।        

এভাবে করোনা আক্রান্ত হয়েও অনেকের মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। আবার কারও মধ্যে উপসর্গ দেখা গেলে তা চরম মাত্রার না। ফলে অনেকেই রোগ নিয়ে অবহেলা করেন। এরই মধ্যে ভিতরে ভিতরে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করে ফেলে। পরবর্তীতে রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থা তৈরি হয়।

এতদিন ধরে মুখে স্বাদ ও নাকে গন্ধ না পাওয়া বা জ¦র আসাটা করোনার অন্যতম উপসর্গ হিসেবে ধরা হতো। এখন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকের কাছে উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। জ্বর ভালো হওয়ার পর অনেকের আবার নীরবেই ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে।

আক্রান্ত প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার আগে আমার তেমন কোনো উপসর্গ ছিল না। সামান্য জ¦র আসার পর আমি সন্দেহ করে কভিড টেস্ট করি। পরে দেখা যায় আমার পজিটিভ আসে। 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কারোর মধ্যে কম কারোর মধ্যে বেশি। কম দেখা দিলে অনেকেই অবহেলা করে চিকিৎসকের কাছে যান না কিংবা কভিড টেস্টও করান না। ফলে শেষ পর্যায়ে গিয়ে পরীক্ষার পর পজিটিভ শনাক্ত হয়। ততক্ষণে রোগীর শরীরে নানা রোগ তৈরি হয়ে গেছে। এমনকি এ রকম অনেকের অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যেতে পারে। এটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘অক্সিজেনজনিত ঘাটতি রোগ’ বলা হয়। তাই করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

মা ও শিশু হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. হাসান রাব্বি বলেন, আগে অধিকাংশ করোনারোগীরই স্বাদ-গন্ধ পাওয়ার ক্ষমতা নষ্ট হতো। এখন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টসহ বিভিন্নভাবে আক্রান্তদের উপসর্গ পরিষ্কারভাবে দেখা দেওয়ার আগেই শরীরের ভিতরে সংক্রমণ করছে। এমনকি অনেকের আবার নীরবে ফুসফুসও সংক্রমণ করে ফেলছে। 

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে বুধবার ২৪ ঘণ্টায়  করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০ জন এবং নতুন করে শনাক্ত হয় ৫৮৯  জন। বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হন ৯৩ হাজার ২৩৪ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৬৮ হাজার ৩৭৪ জন এবং উপজেলায় ২৪ হাজার ৫৯৪ জন। ইতিমধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ১০৩ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৬৪০ জন ও উপজেলায় ৪৬৩ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ১১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর