মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে দরিদ্রদের মুখে হাসি ফোটাল বসুন্ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে দরিদ্রদের মুখে হাসি ফোটাল বসুন্ধরা

রাজশাহীর চারঘাটে দরিদ্রদের হাতে বসুন্ধরার উপহার তুলে দেন উপজেলা চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম ও পৌর মেয়র একরামুল হক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাকালে কর্মহীন, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে আছে দেশের বৃহত্তম শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশনায় সারা দেশে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাজশাহীর তিন উপজেলার ৯০০ পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। গতকাল রাজশাহীর পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার দরিদ্ররা পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা।

বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেয়ে তজিবার শেখ নামের এক উপকারভোগী বলেন, ‘করোনার মধ্যে টুকটাক কাম চলে। এটা দিয়া সংসার চালান কষ্ট হয়। খুব দুঃখে দিন যায়। আজ বসুন্ধরার সহযোগিতা পেয়েছি। তারা চাল, ডাল, আটা দিছে। কিছুদিন খাইতে পারব। তাদের জন্য দোয়া করি।’ ডলি রানী সূত্রধর নামের আরেক উপকারভোগী বলেন, ‘আমার স্বামী একা ইনকামের মানুষ। কাঠের দোকানে কাম করে। এই টাকায় মেয়েদের পড়ার খরচ দিয়া সংসার চলে না। তোমাদের এই সাহায্যে আমরা সাত-আট দিন খেতে পারব। তোমাদের গতর ভালো রাখুক। সুখে থাকো।’ চারঘাটে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের অসহায় মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছে। এ সময়ে যারা কাজ হারিয়েছেন, তাদের জন্য এ সহায়তা কিছুদিনের জন্য হলেও উপকারে আসবে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে দিন-রাত যারা পরিশ্রম করছেন, আপনারা তাদের জন্য দোয়া করবেন। তারা যেন আপনাদের আবারও সহযোগিতা করতে পারেন। বর্তমান করোনাকালে সবাইকে বেঁচে থাকতে হলে মাস্ক পরতে হবে। টিকা নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবাই সতর্ক থাকবেন।’

খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র একরামুল হক, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক রানা।

সকালে পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ৩০০ পরিবারের হাতে বসুন্ধরার উপহার তুলে দেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান।

বেলপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ আজকে আমাদের এলাকার ২৮টি গ্রামের অসহায় পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে। তাই আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তারা যেন সামনেও আমাদের সহযোগিতা করতে পারে সে জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

বাঘা উপজেলার মানিকের চরে থাকেন কফির উদ্দিন শেখ। কদিন আগে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় তার ভিটেমাটি। এখন বাঁশের মাচায় পরিবার নিয়ে ঠাঁই জুগিয়েছেন। সঞ্চয়ের সামান্য কিছু চাল-ডাল দিয়ে দুমুঠো খাচ্ছেন। তবে তাও এখন ফুরিয়ে এসেছে। ভিটেমাটি হারিয়ে তার মতো অনেক পরিবার এখন মাচাতেই আশ্রয় নিয়েছে। নদীভাঙনে নিঃস্ব হওয়া এসব পরিবারকেও খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সহায়তা পেয়ে কফির বলেন, ‘আমরা এহন নিঃস্ব। এই সময়ে বসুন্ধরা চাল, ডাল দিছে। তা আমাদের অনেক উপকার হইছে। আল্লাহ তারে ভালোবাসুক। তাদের আরও বাঁচায়া রাখুক।’ আবু তাহের মোল্লা নামের আরেক উপকারভোগী বলেন, ‘নদীতে আমাদের সব ভেসে গেছে। এহন এই সাহায্য আমাদের অনেক দরকার। কিছুদিন শান্তিতে খাইতে পারব।’

পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ বলেন, ‘দেশে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি আছেন। কিন্তু মানুষের কল্যাণে খরচ করার মতো মানসিকতা বসুন্ধরা গ্রুপ দেখিয়েছে। তারা সারা দেশে ২ লাখের বেশি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। আমাদের এলাকার ভাঙনকবলিত ৩০০ পরিবারকেও সহায়তা দিয়েছে। তাই তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা সবাই দোয়া করবেন। তারা যেন আপনাদের আরও সহায়তা করতে পারে।’

খাদ্যসামগ্রী বিতরণের কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান। এ নিয়ে গত তিন দিনে রাজশাহীর ৯ উপজেলা ও নগরীতে ৩ হাজার কর্মহীন দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাল বসুন্ধরা গ্রুপ।

সর্বশেষ খবর