পাওনা টাকা ফেরত ও ই-অরেঞ্জের মূল হোতা পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানাকে ভারত থেকে দেশে আনার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় বিক্ষোভকারীদের। গতকাল দুপুরে হাই কোর্ট থেকে মৎস্য ভবনের দিকে যাওয়ার সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে সকালে ই-অরেঞ্জের কথিত মালিক পুলিশ সদস্য সোহেলের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়াসহ ১০টি দাবি তুলে ধরে মানববন্ধন করেন গ্রাহকরা। ভুক্তভোগী কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যানারে করা মানববন্ধন শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে যাচ্ছিলেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা। এ সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। পরে তিন শতাধিক গ্রাহক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাব থেকে মৎস্য ভবনের দিকে গিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। মিছিলে তারা পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ বিষয়ে ই-অরেঞ্জ ভুক্তভোগী কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আফজাল হোসেন বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করেছে। আমাদের ১০ জন এতে আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে। আমরা নতুন করে কর্মসূচি দেব। ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস। এমনিতেই যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। এর মধ্যে ই-অরেঞ্জ গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। প্রথমে আমরা তাদের সড়ক ছেড়ে দিতে বলি। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হলেও পরে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অন্তত ১২টি ই-কমার্স কোম্পানি ব্যাপক মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির লোভ দেখিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ই-অরেঞ্জ একটি।
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্লাহ এক গ্রাহকের করা ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন।