মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির কাজ শেষ কবে

প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চারবার ♦ অর্থাভাবে বন্ধ সব কর্মযজ্ঞ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চারবার। কিন্তু তারপরও কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের জুনে। অথচ কাজই শুরু হয় ওই সময়। এখন অবকাঠামো নির্মাণের পর আবার থেমে গেছে কর্মযজ্ঞ। কাজ শেষ করতে আরও ২০ কোটি টাকা চেয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। তার অনুমোদন না হওয়ায় এখন কাজ পুরোপুরিই বন্ধ। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে দেশের একমাত্র এ কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি গড়ে তোলা হচ্ছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০১৫ সালে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৭৩ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। চতুর্থবারের মতো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

এরই মধ্যে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অন্তত ছয়জন কর্মকর্তা। বর্তমান প্রকল্প পরিচালক ড. সঞ্জয় চক্রবর্তী। তিনি বলছেন, প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ। কাজের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ। ইতিমধ্যে খরচ হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। হাতে থাকা ৩০ কোটি টাকায় আসবাবপত্র ও এয়ার কন্ডিশন কেনা এবং সাজসজ্জার কাজ হবে না। দরকার অন্তত ৫০ কোটি টাকা। তাই আরও অন্তত ২০ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তা দু-এক দিনের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে যাবে। অর্থ বরাদ্দ পেলে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু হবে। রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। এরপর থেকেই কারা প্রশিক্ষণ একাডেমিতে জেল সুপারদের ছয় মাস, ডেপুটি জেলাদের তিন মাস মেয়াদি এবং পুরুষ ও নারী কারারক্ষীদের তিন মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কারা অধিদফতরে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এসব প্রশিক্ষণার্থীর কারাগারের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান, সুশৃঙ্খল আচরণ, বন্দীদের প্রতি মানবিক আচরণ, সৌজন্যবোধ ও প্রয়োজনীয় বিধিবিধান সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ একাডেমিটি ২০১৪ সালে সরকারি অনুমোদন লাভ করে। তারপর একনেক অর্থ বরাদ্দ দেয়। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় এখনো একাডেমির কার্যক্রম চলছে কারাগারের ভিতরেই পুরনো একতলা ভবনে। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের মোট জমির পরিমাণ ৬৫ একর। এর মধ্যে ১৮ একরের ওপরে কারাগার। বাকি ৪৬ একর জমির মধ্যে ৩৭ একরের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি। কাজ শুরুর পর কারাগারের পাশেই জেগে ওঠা পদ্মার চরে অস্থায়ী স্থাপনা হিসেবে ফুটবল ও ভলিবল মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাটা হয় অনেকগুলো গাছও। এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন। তখন নির্মাণকাজ থমকে যায়। ওই সময় দেশের অন্য কোনো জায়গায় কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণেরও আলোচনা শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, একাধিকবার স্থান পরিবর্তন, কারাগারের পুরনো স্থাপনা ও গাছ কাটায় জটিলতা, নকশা প্রণয়নে বিলম্বসহ নানা কারণে কাজই শুরু হয়েছে দেরিতে। তারপর এখন একটু ব্যয়ও বেড়েছে। নতুন করে প্রাক্কলন করে প্রকল্প পরিচালককে দেওয়া হয়েছে। তিনি অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাবও দিয়েছেন। অর্থ পেলেই দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর