রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

মেট্রোরেলের পথে চট্টগ্রাম

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নগরের যোগাযোগব্যবস্থায় উৎকর্ষ আনতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা করে। তখন সমীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা ধরে সম্ভাব্য মোট ব্যয় ৮৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করে। পরে উদ্যোগটির আর কোনো অগ্রগতি ছিল না।

তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর মেট্রোরেল নির্মাণে ফের তৎপরতা শুরু হয়। এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে চীনা প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীনা প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য আবেদন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে মেট্রোরেল নির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। প্রসঙ্গত, সরকার দেশে প্রথমবারের মতো ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

জানা যায়, নগরে মেট্রোরেল নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরও এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। তবে ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ঢাকায় কেন মেট্রোরেল সীমাবদ্ধ থাকবে’ বলার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল চালুর নির্দেশ দেন। এর পর থেকে শুরু হয় তৎপরতা। ১৩ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীতে মেট্রোরেল অথবা মনোরেল চালুকরণ’ শীর্ষক সভা। সভায় চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিআরসিসি) এবং উইহায় ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ কোম্পানি লিমিটেড মেট্রোরেল নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেয়। এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী প্রতিষ্ঠান দুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেওয়ার নির্দেশনা দেন। প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অনুমোদন দেবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু করবে প্রতিষ্ঠানটি।

চসিকের নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ ওমর বলেন, ‘চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটিও মেট্রোরেল নির্মাণ নিয়ে অভিজ্ঞ। মন্ত্রণালয় সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে অনুমোদন দিলে যথাসময়ে তারা কাজটি শেষ করতে পারবে। ফলে নগরে মেট্রোরেল নির্মাণের বিষয়টি আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি। আশা করি প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করে নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।’

জানা যায়, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষায় তিনটি রুটে মোট সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন ও ৪৭টি স্টেশন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা ধরে সম্ভাব্য ৮৫ হাজার কোটি টাকা মোট ব্যয় ধরা হয়। এর মধ্যে কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এমআরটি লাইন-১-এর দৈর্ঘ্য সাড়ে ২৬ কিলোমিটার (২০টি স্টেশন), সিটি গেট থেকে নিমতলা হয়ে শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর পর্যন্ত লাইন-২-এর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার (১২টি স্টেশন) এবং অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গিবাজার ও পাঁচলাইশ থেকে এ কে খান পর্যন্ত লাইন-৩-এর দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৪ কিলোমিটার (স্টেশন ১৫টি)। তবে অধিকতর সম্ভাব্য যাচাইয়ে এ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর