নেতৃত্বের কলহে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে খুলনা বিএনপির রাজনীতি। বিবদমান দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে তৃণমূলে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে দলটি। জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল জেলা বিএনপি ইফতার মাহফিলে চেয়ারে বসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি ঘটনায় যুবদলের পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে যুবদল নেতা নাজিমুজ্জামান জনি এবং তৌহিদুর রহমান রাজুর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির মানববন্ধনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবদল কর্মীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরে মহানগর যুবদল সম্পাদক নাজমুল হুদা সাগরসহ ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়। এ ছাড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে প্রভাব বিস্তার নিয়ে কেন্দ্রীয় দুই নেতার মধ্যে রয়েছে ঠান্ডা লড়াই। ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ নেতারা নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে জায়গা পাওয়া এক নেতার অনুসারী হয়ে থাকতে চাইলেও জেলার রাজনীতিতে যুক্ত কেন্দ্রীয় আরেক নেতা সেখানে নিজের বলয় তৈরি করতে চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া কেন্দ্র ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করেই মাঠে সক্রিয় রয়েছে বিদায়ী নগর কমিটির শীর্ষ দুই নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও আরিফুর রহমান মিঠুর সমর্থকরা। এর মধ্যে গত ১৩ এপ্রিল কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে খুলনায় বিবদমান দুই পক্ষ আহ্বায়ক কমিটি ও মঞ্জু-মিঠুর সমর্থকরা আলাদা স্থানে দোয়া ও ইফতার মাহফিল আয়োজন করেন।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি খুলনা ক্লাব মিলনায়তনে ও মঞ্জু-মিঠুর সমর্থকরা ‘বিএনপির মহানগর কমিটি সাবেক নেতাদের ব্যানারে হোটেল টাইগার গার্ডেন মিলনায়তনে ইফতার মাহফিল করে। থানা পর্যায়েও বিএনপি নগর কমিটির সাবেক নেতাদের ব্যানারে আলাদা ইফতার কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সদ্য বিলুপ্ত খালিশপুর থানা বিএনপির সভাপতি ফজলে হালিম লিটন বলেন, আহ্বায়ক কমিটিকে কোরামিন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটিকে সামনে রেখে পিছন থেকে তৃতীয় কেউ দল পরিচালনা করছেন। প্রতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় নেতাদের খুলনায় আনা হচ্ছে তাদের আকর্ষণে দলের কিছু নেতা-কর্মী জড়ো হয়। কিন্তু ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দলে ভেড়াতে পারেনি আহ্বায়ক কমিটি।
তবে এসব সংকট কাটিয়ে তৃণমূলে দলকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেন ঘোষিত নগর আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম জহির। তিনি বলেন, থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ে দলের প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা ভেঙে দলকে সক্রিয় করা হচ্ছে। বিচ্ছিন্নভাবে যারা কর্মসূচি করছে তারা মান-অভিমান নিয়ে দূরে আছে। দলের কর্মকান্ডে তারা বাধা হবে না। তারাও একসময় দলের হয়ে কর্মসূচিতে ফিরে আসবেন।