সব শঙ্কা উড়িয়ে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে জব্বারের বলী খেলার ১১৩তম আসর। ঐতিহ্যবাহী এ খেলাকে ঘিরে বসেছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। বলী খেলা ও মেলাকে ঘিরে উৎসব চলছে চট্টগ্রামে। গতকাল এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, প্রতি বছর পাঁচ দিনব্যাপী মেলা হলেও এবার রমজানের কারণে তিন দিন মেলা হবে। ঐতিহ্যবাহী এ মেলার মূল আকর্ষণ বলি খেলা আজ বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। খেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বলীরা এরই মধ্যে চট্টগ্রাম চলে এসেছেন। নিয়মিত বলীর পাশাপাশি শৌখিন বলীদের খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে।
জব্বারের বলী খেলায় অংশগ্রহণ করবেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় ১০০ বলী। যার মধ্যে ‘পেশাদার’ বলীর পাশাপাশি শৌখিন বলীও রয়েছেন। পেশাদার বলীরা সরাসরি চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ করবেন। চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপের পাশাপাশি পুরস্কৃত করা হবে চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়া ৪০ বলীকে। জব্বারের বলী খেলা ঘিরে বসেছে বৈশাখী মেলা। কোতোয়ালি থেকে লালদিঘীর পাড় হয়ে আন্দরকিল্লাহ মোড় এবং নগরীর সিনেমা প্যালেস কেসি দে রোড হয়ে জেলরোড পর্যন্ত মেলা বসেছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে মেলায় ভিড় করেছেন বিক্রেতারা। এ মেলা থেকেই সাংসারিক নিত্য ব্যবহার্য ও গৃহস্থালি পণ্যের প্রতিবছরের চাহিদা মিটান গৃহিণীরা। তাই গৃহিণীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এ মেলার পণ্যসামগ্রী। কিন্তু দুই বছর বন্ধ থাকার কারণে এবারের মেলাকে ঘিরে ক্রেতাদের আগ্রহ অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। এরই মধ্যে বিক্রেতারা পসরা সাজিয়ে বসেছেন হাতপাখা, শীতল পাটি, ঝাড়ু, মাটির কলস, মাটির ব্যাংক, রঙিন চুড়ি, ফিতা, হাতর কাঁকন, বাচ্চাদের খেলনা, ঢাকঢোল, মাটি ও কাঠের পুতুল, বাঁশি, তৈজসপত্র, আসন, চৌকি, খাট, আলমারি, ফুলদানি, তালপাখা, টব, হাঁড়ি-পাতিল, দা-ছুরি, কুলা-চালুন, টুকড়ি, বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা, মুড়ি, মুড়কি, লাড্ডু, জিলাপি নিয়ে। তবে মেলায় সবচেয়ে বেশি থাকে ঝাড়ুর চাহিদা। এবার কয়েক লাখ টাকার ঝাড়ু বিক্রি হবে- এমন প্রত্যাশা করছেন বিক্রেতারা।
প্রসঙ্গত, ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুবক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ প্রতিযোগিতার সূচনা করেন। এ প্রতিযোগিতা জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিবছর ১২ বৈশাখ নগরের লালদীঘি মাঠে বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ খেলায় অংশগ্রহণকারীদের বলা হয় ‘বলী’।